ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২২/১১/২০২২ ৭:১৬ এএম

এক জন মানুষের এক বেলা খাবার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ থেকে ৪৮ টাকার মধ্যে। নিজের পছন্দের তরকারির সাথে খাওয়া যাবে এক বেলার ভাত। অনেকটা আশ্চর্যজনক হলেও এটি একে বারেই সত্যি। পর্যটক শহর কক্সবাজারে ‘দ্যা পটেটো ইটার্স’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট দিচ্ছে এমন খাবার অফার।

নিজেরা এটিকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান দাবি করে পরিচালনা শুরু করেন গত ৩ দিন আগে (১৮ নভেম্বর)। সোমবার দুপুর ১ টায় প্রতিষ্ঠানটি গিয়ে দেখা যায় অনেকেই তাদের পছন্দের খাবার খাচ্ছেন। বাইরে টাঙ্গানো মূল্য তালিকাতে দেখা গেছে, আলু ভার্ত বা শাকের সাথে ভাত ১২ টাকা, মুরগীর মাংসের সাথে ভাত ৪৮ টাকা, মাছের সাথে ভাত ৪৮ টাকা, ডিমের সাথে ভাত ৩৫ টাকা, আলু ভার্ত ও শাকের সাথে ভাত ২৪ টাকা। আর প্রতিটি অফারের সাথে ডাল এবং সবজী ফ্রি।
কক্সবাজার পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের টেকপাড়ার কালুর দোকান বাজার এলাকাটি খুব পরিচিত এলাকা। ওই কালুর দোকান বাজারের দক্ষিণ পাশের কাউন্সিলর গলি হিসেবে পরিচিত সড়কে চলছে এমন একটি রেস্টুরেন্ট। যেটির উদ্যোক্তা পাহাড়তলী এলাকার ব্যবসায়ী তরুণ কামরুল ইসলাম সজিব।
প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা হয় কামরুল ইসলাম সজিবের সাথে। তিনি জানান, ‘দ্যা পটেটো ইটার্স’ বিখ্যাত ছবি অত্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প রয়েছে। যে গল্পটি থেকে অনুপ্ররেণা পেয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানটি চালু করেন। ঠিকাদারি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং খামার ব্যবসায় জড়িত তিনি। কিন্তু সাধারণ মানুষের ব্যয়ভার কমানোর উদ্দেশ্যে শুরু করেন এ রেস্টুরেন্ট।

তিনি বলেন, ‘আমার খামারে একজন কর্মচারী রয়েছেন। যিনি ১২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকুরি করেন। আমার এই কর্মচারী প্রতিমাসে একজনের খাবার খরচ ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। ফলে যা সাশ্রয় হয় তা বাড়ির স্বজনদের জন্য পাঠান। কক্সবাজারে এমন কর্মচারি, শিক্ষার্থী, স্বল্প আয়ের মানুষ অনেক। এদের কম খরচে এক বেলা খাওয়ার ইচ্ছে থেকে এমন প্রতিষ্ঠান। এখন প্রতিদিন গড়ে ৩ শত মানুষ এখানে খেতে আসেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তার নিজস্ব জমিটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে দিয়েছেন। অনেক বন্ধু স্বেচ্ছা শ্রমে প্রতিষ্ঠানটি চালু করা হয়েছে। এরপরও বার্বুচি ও বয়দের জন্য একটি খরচ রয়েছে। যার কিছু অংশ নিজ থেকে দিচ্ছেন। তবে আরও ব্যাপক সংখ্যক মানুষ খেতে আসলে এই ক্ষতিটা আর হবে না।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে এ প্রতিষ্ঠানটি সফল করতে পারলে কক্সবাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আরও ১০ টি প্রতিষ্ঠান চালুর উদ্যোগ তিনি নেবেন। তিনি মনে করেন, লাভ নয় এখানে খেয়ে মানুষ নিজদের যে টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন তাই তার লাভ।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম জামশেদ জানান, তরুণ ব্যবসায়ী সজিব সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে তার পরিকল্পনার কথা জানানো তার উদ্যোগে স্বাগত জানিয়ে পাশে থাকার অংশ হিসেবে জমিটি ব্যবহার করতে দিয়েছেন। অনেক মানুষ এক বেলা খেয়ে প্রশংসা করছেন। এমন উদ্যোগের পাশে থাকতে পেরে তিনি আনন্দিত।
ম্যানেজার হিসেবে স্বেচ্ছায় থাকা সজিবের বন্ধু শাহারিয়ার বিন নাছির জানান, তিনি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। অবসর সময়ে বন্ধুর ভালো উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন সপ্তাহের ২ দিন।
দুপুরে খেতে আসা নুরুল আলম নামের এক রিক্সা চালক জানান, ডিম দিয়ে ভাত খেয়ে ৩৫ টাকা দিয়েছেন। অন্য কোনখানে যার মূল্য আসতো ৬০ টা। কম খরচে খেয়ে তিনি আনন্দিত।
কক্সবাজার মহিলা ও শিশু অধিদপ্তরের অফিস সহকারি মুহিবুল্লাহ জানান, গত ১ মাস ধরে কক্সবাজারে কর্মরত তিনি। প্রতি বেলায় হোটেলে খান। খেতে অনেক খচর। এখন তার অর্ধেকের কম খরচে খাচ্ছেন। খাবার পছন্দও তার। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রতি দিন ২ বেলা খেতে আসা মানুষ ক্রমাগত বাড়চ্ছে আর প্রশংসাও করছেন। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে সংঘাত/টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে ঢুকল আরও ৯ বিজিপি সদস্য

মিয়ানমারের রাখাইনে সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ...