উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
বড় মহেশখালীর ফকিরাঘোনা গ্রামে ঈদের পর দিন রাতে একদল বখাটে ছাত্রের ক্ষুরের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে চট্টগ্রামের একটি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্রী সাবেরা হোসনা শেলী। তার মুখ ও বাহুতে ক্ষুরের আঘাত করা হয়। বর্তমানে ওই ছাত্রী জেলা হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন বলে পারিবারিক সূত্রের দাবী। তারা বলছে একটি বিশেষ মহলের ইশারায় হাসতাপালে তাকে ভালমতো চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক হামলাকারী এক জনকে গ্রেফতার করেছে।
শেলীর বাবা হোছন আলী জানান- দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী পরিবারের সন্তান খাইরুল আমিন তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। এনিয়ে বিগত ১ বছর আগে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর ভবিষ্যতে আর এমন হবে না মর্মে অঙ্গিকার করে আসে খাইরুল আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। এর পরে তার পরিবারের উপর নানা ভাবে হুমকি আসায় এলাকা থেকে দুরে নিয়ে শেলীকে চট্টগ্রাম নগরীর কাপাসগোলা ওমেন স্কুল এন্ড কলেজে এইসএসসিতে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। এবারের ঈদে শেলী মহেশখালীর গ্রামের বাড়িতে এলে ঈদের পরদিন রাত সাড়ে ৯ টায় খাইরুলের নেতৃত্বে ৬-৭ জন লোক ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকে তার উপর এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এসময় ব্যপাক মারধরের পাশাপাশি ছাত্রীর গালে ও হাতের বাহুতে ধারালো ক্ষুরের আঘাত করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মহেশখালী ও পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খাইরুল আমিন মহেশখালী কলেজের এইচএসসি একজন অনিয়মিত ছাত্র। সে একজন শিবির কর্মী বলেও সূত্রে প্রকাশ। মহেশখালী থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান ঘটনার পরপরই পুলিশের একাধিক ইউনিট বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। এসময় খাইরুলের অন্যতম সহযোগী এবাদ উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় শেলীর বাবা হোছন আলী বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে। ১ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্য হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে মহেশখালী ও মহেশখালীর বাইরে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে ওসি জানান।
আহত ছাত্রীর বাবার অভিযোগ কক্সবাজার হাসপাতালে তার মেয়েকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তার মেয়ে বেশ মুমূর্ষু হওয়ার সত্বেও ভর্তির পর দিন হাসপাতাল থেকে এই রোগীকে বের করে দেওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার পর অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারণে অজ্ঞান হয়ে পড়ে শেলী। পরে ৩০ জুলাই বিকেলে আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার বিষয়ে বেশ অসহযোগিতা করেন বলে বাবার অভিযোগ। আঘাতের ধরণটা ব্যাপক বলে জানিয়েছেন তাৎক্ষনিক চিকিৎসা দেওয়া মহেশখালী হাসপাতালের ডাক্তারগণ। এদিকে এমন পটভূমিতে ১ জুলাই শনিবার দুপুরে মহেশখালী কলেজে এক সমাবেশে কোন শিক্ষার্থী সন্ত্রাস বা ছাত্রীদের হয়রাণী করলে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে ঘোষণা দেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। এ সময় কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ আলহাজ্ব আশেক উল¯œাহ রফিকও উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বিকেলে কক্সবাজার হাসপাতালে গিয়ে দেখাযায় আহত ছাত্রী শেলীর শরীর খুব করে কাঁপতেছে। জানতে চাইলে কর্তব্যরত এক নার্স জানান- মূলত: অধিক রক্তক্ষরণের কারণে শরীর দুর্বল হওয়ায় এমনটি হচ্ছে। তবে এটি সেরে উঠবে।