ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৫/০৮/২০২৪ ১১:১৩ এএম

সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঈদগাঁও এর বিভিন্ন পয়েন্টে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী একাধিক চক্র। মামলা জরিমানা কিছুই দমাতে পারছেনা এসব প্রভাবশালীদের। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকার রাজস্ব। বালু উত্তোলনের ফলে খালের তীব্র ভাঙনের পাশাপাশি পরিবেশ হচ্ছে ধংস। অবৈধ বালু উত্তোলনে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ঈদগাঁও উপজেলার বৃহৎ ২ টি বালু মহাল হলো ঈদগাঁও খালের বালুমহাল এবং ঈদগাঁও মাছুয়াখালী বালুমহাল। আইনি জটিলতার কারণে ঈদগাঁও খালের বালু মহালটি সরকারিভাবে নিলাম বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি বন্ধ রয়েছে ঈদগাঁও মাছুখালী বালু মহালও। গত বছর ঈদগাঁও মাছুয়াখালী বালুমহালটি ইজারা নেয় স্থানীয় কালিরছড়া মমতাজ আহমদের পুত্র কাইয়ুম উদ্দিন। গত জুলাই মাসে তার ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও বর্তমানে নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলন করে আসছে। গত বছর ইজারাকালীন সময়ে কাইয়ুম উদ্দিন সরকারি শর্ত না মেনেই ইজারাভুক্ত জায়গার বাইরে বালু উত্তোলন করার কারণে স্থানীয় প্রশাসন তার উক্ত বালু জব্দ করে। ওই জব্দকৃত বালু ১ কোটি ১ লাখ দশ হাজার টাকায় নিলাম হয়ে জমা হয় সরকারি কোষাগারে। ওই ইজারার মেয়াদ গত জুলাই মাসের শেষ হওয়ার পর পুণরায় নিলাম ডাকা হয়নি। সরকারি নিলাম না হওয়া সত্ত্বেও কাইয়ুম উদ্দিন অবৈধভাবে সে মহাল থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করে আসছে। বেশ কয়েকটি ডাম্পার এবং ট্রাকের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে জমায়েত করার পর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে বলে জানা গেছে। ফলে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। ফলে কাইয়ুম উদ্দিন সিন্ডিকেট সরকার নির্ধারিত জায়গার বাইরে গিয়ে খানছিরা ঘোনা নামক এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি ডাক মতে, গত ৩১ জুলাই ইজারা মেয়াদ শেষ হলেও এখনো অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন ইজারাদার কাইয়ুম উদ্দিন। দেশের চলমান অস্থিরতাকে পুঁজি করে দৈনিক লাখ লাখ টাকার বালু অবৈধ উত্তোলন করে আসছে সিন্ডিকেটটি। সরকার পতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এবং প্রশাসন ব্যস্ত থাকার সুযোগে বর্তমানে প্রতিদিন নতুন ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদারসে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে কাইয়ুম উদ্দীন। প্রায় অর্ধশত ডাম্পার বালু উত্তোলনে ব্যবহার করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের কারণে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। কাঁচা সড়ক দিয়ে ডাম্পার গাড়ি চলাচলের কারণে নষ্ট হচ্ছে সড়কের নির্মাণ কাজ।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কিভাব ইজারাদার বালু উত্তোলন করছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে ঈদগাও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা বলেন, ‘গত জুলাই ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও বৃষ্টির কারণে সে বালু বিক্রি করতে না পারায় তার আবেদন ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছি। তবে চৌহদ্দির বাইরে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অপরদিকে ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কোন ধরনের ইজারা বিজ্ঞপ্তি ছাড়া এবং নিলাম ডাকের আয়োজন ছাড়া বালু উত্তোলনের নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) বিভীষণ কান্তি দাশ জানান- ইজারা বিধি অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইজারার আয়োজন করতে হয় এবং উন্মুক্ত ডাকে যিনি সর্বোচ্চ ডাককারী হবেন তাকে নির্দিষ্ট শর্তে ইজারা দেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। মৌখিক বা কারো ক্ষতি বিবেচনায় বালু উত্তোলন করার সুযোগ নেই। তিনি জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখা থেকে কাইয়ুম নামের কাউকে ইজারার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়নি বলে জানান। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
অপরদিকে ঈদগাও বাজারের পাশে ঈদগাঁও নদীর বালু মহালটি উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে ইজারা বন্ধ রয়েছে। ইজারা বন্ধের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কয়েকজন প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতা রাতের আঁধারে ডাম্পার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে চলছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর উভয় পাড়ের রক্ষাবাধ। চলতি বছরে এর প্রভাব পড়েছে আশেপাশের গ্রামগুলোতে। নদীর তীর ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যা দেখা দেয়। তলিয়ে যায় ঘরবাড়ি।

সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নির্বিচার বালু উত্তোলন করে পরিবেশ বিপর্যয়কারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন মহল

পাঠকের মতামত

১ নভেম্বর থেকে খুলছে সেন্টমার্টিন, তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ

সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে আগামী ১ নভেম্বর থেকে। পর্যটন মৌসুম চলবে ফেব্রুয়ারি ...

ঢাকায় রেলক্রসিংয়ে প্রাণ হারালেন কক্সবাজারে উষা বড়ুয়া

রাজধানী ঢাকার মহাখালী রেলক্রসিংয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন কক্সবাজারের রামু উপজেলার মেরংলোয়া গ্রামের উষা বড়ুয়ার ...