প্রকাশিত: ২০/০৬/২০২২ ৮:২৫ পিএম

চট্টগ্রামে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাস ও তাঁর স্ত্রীর চুমকি কারনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় দুদকের পক্ষ থেকে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের আবেদন করা হয়।

আজ সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। দুদকের সরকারি কৌঁসুলি আইনজীবী মাহমুদুল হক যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন।

আইনজীবী মাহমুদুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যুক্তিতর্কে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় ৩০ মিনিট যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছি আদালতে। পরে আদালত আগামী ২৭ জুন প্রদীপ দাস ও চুমকি কারনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রী চুমকি কারনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেন। ২০২১ সালে ২৬ জুলাই প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দেয়। একই বছর ১৫ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগপত্রে প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় ছয়তলা বাড়ি ও পাঁচলাইশ থানার ষোলোশহরের একটি বাড়ি, একটি ব্যক্তিগত গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ৪৫ ভরি স্বর্ণ, কক্সবাজারে চুমকির নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে প্রদীপ দম্পতির ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের হদিস মিলেছে। যার মধ্যে বৈধ আয় থেকে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকার সম্পদ পায় দুদক। বাকি ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

প্রদীপ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে যখন দুদকের এই মামলাটি হয় ঠিক এর এক মাস আগে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হন। সারা দেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় করা সিনহার বোনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রদীপ ২০২০ সালের ৬ আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ওই মামলায় গত বছর ২৭ জুন প্রদীপসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ বছর কক্সবাজার আদালতে ৩১ জানুয়ারি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড এবং অপর ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

অন্যদিকে দুদকের মামলার পর দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর চুমকি কারন গত ২৩ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন চুমকি কারন। এ সময় আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তাঁরা দুজনই কারাগারে রয়েছেন

পাঠকের মতামত