উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬/০৯/২০২২ ৯:১২ এএম

আমার শেষ জীবনে এসে এমন কিছু করতে চাই যেন জেলাবাসী সারাজীবন মনে রাখে। আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করবো এক্ষেত্রে আপনারা সকলে সহযোগিতা করবেন। আমার অফিসের সামনে গালি দিয়ে যাবেন অন্তত ভুলটা ধরিয়ে দিবেন। গতকাল সোমবার কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউকে’র) বিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানে নবাগত কউকে’র চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার একথা বলেন।

বিদায়ী চেয়ারম্যান লেঃ কর্ণেল (অবঃ) ফোরকান আহমেদ বলেন, আমি চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছি তা কখনো ভাবিনি। আমি যখন দায়িত্ব নিয়ে আসলাম তখন দেখলাম, অফিস নেই, জনবল নেই। টমটমে করে একটি হোটেলে উঠলাম। এটা হলো প্রথম দিনের অবস্থা। আমি কক্সবাজারের জন্য কিছু কাজ করেছি, নিজের দায়িত্ব থেকে করেছি। আমি আত্মীয় বলেন, বন্ধু বান্ধব বলেন কাউকে সুযোগ দিইনি। বক্তব্যের সময় তিনি প্রধান মন্ত্রীর সাবেক সামরিক সচিব জয়নাল আবেদিনের কথা স্বরণ করে বলেন, যখন যেখানে যেভাবে ঠেকেছি সেখানে তিনি আমাকে তুলে এনেছেন।
তিনি বলেন, আমার চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। আমরা চাওয়া পাওয়া এই কক্সবাজার। আমি ৩৬৫ দিন মধ্যে ২শ দিন মন্ত্রণালয়ে ছিলাম। কখনো ভাত খেয়েছি কখনো পাউরুটি কলা খেয়ে দিন পার করেছি। এইসব উন্নয়ন আর এমনে আসেনি? আমার মনে কষ্ট রয়ে গেছে। বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনো রয়ে গেছে। কিছু কিছু কাজ ৬০-৭০ শতাংশ এগিয়ে গেছে। বাকি কাজগুলো নতুনের ছোঁয়ায় এগিয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে পথচলা কউকে’র প্লাস্টিকের ১টি টেবিল ও ৪টি চেয়ার নিয়ে শুরু হয় অফিসিয়াল কাজ। ৯ মাস বেতন পায়নি। কোন গাড়ি পায়নি। কিন্তু নানা সংকট-সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে গত ৬ বছরে প্রতিষ্ঠানটি তার ভিত্তি মজবুত করেছে। এই বিল্ডিং করতে কেউ ঘুষ চায়নি, চাঁদা চায়নি সবাই এগিয়ে এসেছে৷ প্রধান সড়কের কাজ করতে গিয়ে সবার সহযোগিতা পেয়েছি। আমাদের এরিয়া কিন্তু শুধু সদর নয় চারটি পৌরসভা আছে। এখান থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। এজন্য আমি সকল প্রকার সহযোগিতা নতুন চেয়ারম্যানকে করতে চাই। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, কারো ইজ্জত সম্মান নিয়ে টানাটানি করবেন না প্রকৃত ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করুন।
সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, গোলদিঘি, লালদিঘিসহ অন্ধকার এলাকা আলোকিত করেছে সাবেক কউকে’র চেয়ারম্যান। আমরা শুধু সমালোচনায় বিশ্বাসী। সমালোচকরা আজীবন পরাজিত হবে এটাই সত্য! তিনি বলেন, কক্সবাজারে নতুন দিগন্তের সুচনা হয়েছে। যিনি নতুন এসেছেন, তাঁর যোগ্যতা দেখে আমি অবাক! এসব সম্মানিত ব্যক্তিদের সকলের সহযোগিতা সম্মান করতে হবে।

সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, ৬৪ জেলার কোথাও উন্নয়ন কতৃপক্ষ নেই। শুধু কক্সবাজারে দিয়েছেন প্রধান মন্ত্রী। এতেই বুঝা যায় এই কক্সবাজার’কে নিয়ে সরকারের বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ মামুনুর রশীদ বলেন, কক্সবাজারের প্রতি প্রধান মন্ত্রী’র সুনজর আছে। আমরা মনে করবো কে সুন্দর কাজ করছেন এগুলো নিয়ে আমরা কথা বলবো। আমরা যে সুন্দর বিল্ডিং’এ বসে কথা বলছি এটা ওতো একটা প্রাপ্তি। আর যিনি এসেছেন তিনিও খুব যোগ্য একজন মানুষ।
কেন্দ্রীয় আঃলীগের ধর্ম সম্পাদক এড সিরাজুল মোস্তফা বলেন, বিদায়ী চেয়ারম্যান যিনি প্রতিকূলতার মধ্যে অনেক কাজ করে গেছেন। প্রধান মন্ত্রী কর্নেল ফোরকানকে দেখে শুনে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। নতুন চেয়ারম্যানকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
জেলা আঃলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যিনি দায়িত্ব নিয়ে গেছেন তিনি গৌরবের সাথে বিদায় নিয়েছেন। যিনি নতুন এসেছেন, তিনি সুন্দর অপূর্ণ কাজ যেন সম্পূর্ণ করতে পারেন।
প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবু তাহের বলেন, উন্নয়নের মহাযজ্ঞ চলছে কক্সবাজারে। বিদায়ী চেয়ারম্যান সময় স্বল্পতার কারণে যে কাজগুলো করতে পারেননি নবাগত চেয়ারম্যান যেন সেই কাজ সম্পূর্ণ করেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এতে শহরবাসী যেমন উপকৃত হবে তেমনি আগত পর্যটকদেরও ভ্রমনে বাড়তি সুবিধা যোগ হবে।
নবাগত কউকে’র চেয়ারম্যান আরও বলেন, প্রধান মন্ত্রীকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। তিনি ইকোনমিক, ট্যুরিজম নিয়ে পরিকল্পনা করে যাচ্ছেন যেন একটা উন্নত দেশ উন্নত জাতি উপহার দেওয়া যায়। আমি সবসময় ফোরকান স্যারের পরামর্শে থাকতে চাই। তিনি একটা টেবিল দিয়ে বিন্দু থেকে সিন্দুকে পরিণত করেছেন। আমরা সবসময় আপনাকে ফলো করবো। চেয়ারম্যান আসবে চেয়ারম্যান যাবেন কিন্তু ওনাকে কেউ ভুলতে পারবেনা।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব (উপ সচিব) আবু জাফর রাশেদ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, আবু মোর্শেদ চৌধুরী, এডভোকেট প্রতিভা দাশ, মাসুকুর রহমান বাবু প্রমুখ।
বেলা ১২ টায় কউক মাল্টিপারপাস হল রুমে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এয়ার কমোডর মোঃ শরীফ উদ্দিন, বিজিবি কক্সবাজার সেক্টর কমান্ডার মোহাম্মদ আজিজুর রউফ, ডিজিএফআইয়ের কর্ণেল হাসনাত আহমেদ, এনএসআই’র জেলার অতিরিক্ত পরিচালক এম এস কে শাহীন, র্যাব ১৫ অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম সরকার, ইসিবি ১৬ জেলার অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল হাসান আরিফুর রহমান, স্বপ্নীল সিন্ধু বাংলাদেশ নেভী ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমান্ডার এস এম মাহাদি উল হাসান, জলতরঙ্গ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক লেঃ কর্ণেল এ.কে.এম মাসুদ রানা, কক্সবাজার প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম সহ মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
প্রসঙ্গত সরকারের মহাপরিকল্পনাকে ঘিরে ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করেছিল কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা শিবিরে ইফতার যে রকম

আব্দুল কুদ্দুস,প্রথমআলো রোববার বিকেল চারটা। কক্সবাজারের উখিয়ার প্রধান সড়ক থেকে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে ঢোকার রাস্তায় দেখা ...

লাইসেন্সের কোন কাজ নেই, টাকা দিলে লাইসেন্স লাগে না!- উখিয়ার ব্যবসায়ী সাদ্দাম

বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই কথিত লেভেল লাগিয়ে অবৈধভাবে ব্যাটারির পানি বিক্রি করেন উখিয়ার সাদ্দাম মটরসের স্বত্তাধিকারী ...