উখিয়া প্রতিনিধি :
ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্থ উখিয়ার লন্ডভন্ড বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা গত এক সপ্তাহেও চালু করা যাচ্ছে না। ব্যাপক হারে গাছপালা ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাপক ক্ষতি হয়। পুরো উখিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। তবে সীমিত আকারে উপজেলা সদরে ঘূর্ণিঝড়ের দুইদিন পর বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়। এখনো উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বিদ্যুৎবিহীন অন্ধকারে রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পুণঃ সংযোগ দিতে পল্লী বিদ্যুৎ লাইনম্যান ও সংশ্লিষ্টরা প্রতি ঘর পিছু চা ও ইফতারি খরচের নামে ১৫০-২০০টাকা হারে আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের জামতলি এলাকায় ১৩টি গ্রাম্য দোকান রয়েছে। ৩০মে ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে এখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রোববার সন্ধ্যায় উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান মাসুদ সহ কয়েকজন উক্ত এলাকায় বিদ্যুতে পুণঃ সংযোগ দিতে যায়। এতে স্থানীয় মিজানুর রহমান, ফরিদ আলমের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ লাইনম্যানদের পূর্ব সম্পর্ক থাকায় তারা চা ও ইফতারি খরচ বাবদ দোকান পিছু ১০ টাকা হারে আদায় করে। যারা টাকা দিতে ব্যার্থ হয়েছে। তাদের সংযোগ চালু করা হয়নি। স্থানীয় ক্ষুদ্র দোকানদার মোঃ ওসমান সহ একাধিক দোকানদার জানিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা গাছপালা কেটে কুটে পরিস্কার করতে লেবার ও পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যানদের চা ও ইফতারি খরচ বাবদ এসব টাকা আদায় করেছে। টাকা দিতে না পারায় মুরগির দোকানদার শাহাব মিয়া, চা দোকানদার মোঃ ইসমাইল ও সেলুন দোকানদার মৃদুল শর্মার সহ অনেকে বিদ্যুৎ সংযোগ পায়নি।
একইদিন একই ইউনিয়নে হরিণমারা রাবারড্যাম এলাকার খালের উভয় পাশে প্রায় শতাধিক ঘরে আবাসিক বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা হয়েছে। একই বাহানায় স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ লাইনম্যানদের নিয়োজিত দালাল ও প্রভাবশালীরা ঘর পিছু ১০০-১৫০ টাকা হারে আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যারা টাকা দিতে অপারগতা জানিয়েছে তাদের পুণঃসংযোগ দেয়নি বিদ্যুৎ কর্মীরা। পুরো উপজেলায় বিদ্যুতের পুণঃ সংযোগ দিতে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন স্থানীয় কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কাজ থেকে বিপুল পরিমাণের টাকা আদায় করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী, জালিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন লোকজনের মাধ্যমে খবর পাওয়া যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া বিদ্যুৎ সংযোগ পুণরায় সংযোগ দিতে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী ও দালালদের মাধ্যমে গাছপালা পরিস্কার করা, চা ও ইফতারী খরচের নামে ঘর পিছু টাকা উঠাচ্ছে।
যদিও এসব লাইন মেরামত, সংস্কার ও পুণঃ সংযোগ দিতে যাবতীয় খরচ পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বহন করে আসছে বলে জানা গেছে। উখিয়া পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম খালিদ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জোয়ারদার বলেন বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পুণঃ সংযোগ দিতে গিয়ে টাকা আদায়ের অহরহ অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। তবে পল্লী বিদ্যুতের কোন কর্মচারী বা লাইনম্যান এ ব্যাপারে কোন টাকা আদায় করছে না বরং স্থানীয় লোকজন পল্লী বিদ্যুতের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব টাকা আদায় করতে পারে। তবে বিদ্যুৎ পুণঃ সংযোগ দিতে গিয়ে পল্লী বিদ্যুতের কোন কর্মচারীর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জানান ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ভাগ এলাকা সরবরাহ লাইন চালু করা হয়েছে এবং ঝড়ে ৩হাজারের মত সংযোগ নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেগুলো পুণঃ সংয়োগ দেওয়ার কাজ চলছে। হয়ত আগামী ২/৩দিনের মধ্যে পুরো এলাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
আনছার হোসেন:: আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ...
পাঠকের মতামত