প্রকাশিত: ০৮/০৭/২০২১ ৯:৪২ এএম

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালীতে ২৭টি স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনা ঘটেছে। এসব স্বর্ণের বাজারমূল্য ৩কোটি টাকা। স্বর্ণ লুটের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের এক ডজন নেতাকর্মী জড়িত রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনা দামাচাপা দিতে লাখ টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে জড়িতরা।

গত কয়দিন ধরেন এ ঘটনা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে এলাকা জুড়ে। ইতিমধ্যে স্বর্ণেরবার লুটেকারীরা গা ঢাকা দিয়েছেন বলে দায়িত্বশীল একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।

গত ২১ জুন বিকাল পাঁচটার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পালংখালী গোলামবারীর রাস্তার মাথা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সরজমিনে জানা যায়, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং কাটাখালী এলাকার শীর্ষ ইয়াবা (মাদক) ও স্বর্ণ চোরাচালানকারী জনৈক কায়সার দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তর ইয়াবা ও স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। লুট হওয়া স্বর্ণের মালিকও উক্ত কায়সার বলে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও সে এলাকায় ইয়াবা কায়সার নামে পরিচিত।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিয়ানমারের বাসিন্দা জনৈক কালা আহমদের সাথে গভীর সু-সম্পর্ক তার। সে সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সীমান্তের ওপার মিয়ানমার থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণেরবার নিয়ে আসেন কায়সার। পাচার করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা শহর গুলোতে। তাছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক স্বর্ণ চোরাচালান ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে সে।

গত ২১ জুন বিকালে স্বর্ণের একটি বড় চালান কক্সবাজারের উদ্দেশ্য নিয়ে যাওয়ার সময় উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি পশ্চিম পালংখালী এলাকার বাসিন্দা সাবেক বিএনপি নেতা (নব্য আওয়ামী লীগ নেতা) আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. জুনাইদ এর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ২৭টি স্বর্ণেরবার লুট করে নিয়ে যায়।

এসব স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনায় যাদের নাম উঠে আসছে তারা হলেন, উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পালংখালী বাজার এলাকার কালু ড্রাইভার ছেলে আলম শাহ, পশ্চিম পালংখালী এলাকার আজিম উদ্দিনের ছেলে কাশেম আলী, আইয়ুব ইসলামের ছেলে নুরুল ইসলাম ও নলবনিয়া এলাকার মরহুম সিরাজুল ইসলাম (মেম্বার) এর ছেলে একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামী ফয়েজুল ইসলাম।

অভিযুক্ত জুনাইদের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত্র করছে। আসন্ন সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির প্রার্থী হওয়ার পর থেকে আমার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ইউপি সদস্য বলেন, ঘটনা টি সম্পূর্ণ সত্য। ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার ইন্ধনে স্বর্ণেরবার গুলো লুট করা হয়েছে। স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনা ব্যাপক তোলপাট সৃষ্টি হয়েছে।

যুবলীগ নেতা জাহেদ আলম বলেন, সীমান্তের ওপার থেকে আসা স্বর্ণ ও ইয়াবা লুটের ঘটনা কোন নতুন বিষয় নয়। এরকম অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী আমরা। একটি ক্ষমতাশালী গ্রুপ এর সাথে জড়িত রয়েছে ও নিয়ন্ত্রণ করছে।

আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদত হোসেন জুয়েলের কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বর্ণেরবার লুটকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আইনের আওতায় আনা জরুরি হয়ে পড়েছে। এঘটনায় আইন শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পালংখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি এম. এ মঞ্জুর বলেন, স্বর্ণেরবার লুটকারীদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহব্বান জানান । তাদের কারনে দলের সুনামক্ষুন্ন হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলী আহমদ বলেন, আপনারা ব্যাপক খোঁজ খবর নেন। কারা এ ঘটনায় জড়িত। যারা জড়িত তাদের খোঁজে বের করার দাবী জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সনজুর মোরশেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এধরনের খবর আমি শুনেনি, কেউ থানায়ও অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজাম উদ্দিন আহমেদ এর কাছে বিষয়টি অবগত করলে তিনি বলেন, স্বর্ণেরবার লুটের ঘটনাটি আমিও লোকে মুখে শুনেছি। সুত্র : ডিবিডিনিউজ

পাঠকের মতামত

উখিয়ার থাইংখালীর আলাউদ্দিন ও ছাত্তার সিন্ডিকেটের মাটিভর্তি ডাম্পার জব্দ

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী গৌজঘোনা এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় সাবাড় করছে মো. আলাউদ্দিন ও ...