ইকরাম চৌধুরী টিপু::[caption id="attachment_35266" align="alignleft" width="750"]
ফাইল ছবি[/caption]
ভারত মহাসাগরে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা, উদ্ধার কার্যক্রম, নৌ-বাণিজ্য রুট সক্রিয় রাখতে পর্যটননগরী কক্সবাজারের ইনানীতে বসছে বিশ্বের ৩২টি দেশের নৌ প্রতিনিধিদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
আজ রোববার বিকেলে ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপে বাংলাদেশ নৌবাহিনী আয়োজিত ‘আইওএনস মাল্টিলাটেরাল মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রিসার্চ এক্সারসাইজ (আইএমএমএসএআরইএক্স)’ শীর্ষক চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ।
নৌ প্রতিনিধিদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবং রাষ্ট্রপতির আগমনে নিরাপত্তাসহ সার্বিক প্রটোকল পরিচালনা করতে প্রশাসন এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
নৌবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ দুই বছর ধরে ভারত মহাসাগরীয় নেভাল সিম্পোজিয়াম অপারেশন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আগামী জানুয়ারিতে তাঁর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বৃদ্ধি, সাগরে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা, প্রযুক্তি হস্তান্তর, তথ্য আদান-প্রদান, নৌবাণিজ্য রুট জলদুস্যমুক্ত রাখাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ সম্মেলন।
সম্মেলনে ভারত মহাসাগরের উপকূলবর্তী ১১টি দেশের নৌবাহিনীর জাহাজ ও প্রতিনিধি ছাড়াও ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন। সব মিলিয়ে ৩২টি দেশের নৌ প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে এ সম্মেলনে।
বঙ্গোপসাগরে আসা বিদেশি জাহাজগুলো দিয়ে আসা নৌবাহিনীর সদস্যরা যাতে হোটেলে পৌঁছাতে পারে, সে জন্য কক্সবাজার রেজু খালের মোহনায় ড্রেজিং করে সেখানে একটি অস্থায়ী পন্টুন বসানো হয়েছে।
এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন পর্যটন শিল্প বিকাশে কক্সবাজারের জন্য বিশাল সুযোগ জানিয়ে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমেদ বলেন, নৌবাহিনীর এই সম্মেলনে অনেক বিদেশি অতিথিরা আসবে। এতে পর্যটন স্পট হিসেবে কক্সবাজারের ব্র্যান্ডিং হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সৈকতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও তারকা মানের হোটেল সুবিধা রয়েছে, তা এই শহরে আসতে পর্যটকদের আকর্ষণ করবে।
ফোরকান আহমেদ আরো বলেন, তিনি মনে করেন নৌবাহিনীর এ সম্মেলনে প্রকারান্তরে লাভবান হবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। দুপুর আড়াইটায় কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনা গ্রহণ করবেন তিনি। এরপর পাঁচতারকা মানের হোটেল রয়েল টিউলিপে সাময়িক বিশ্রাম নেবেন রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে বিকেল ৩টায় সড়কপথে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
সেখানে ডি-৫ ব্লক পরিদর্শন শেষে শরণার্থী শিবির ও সার্বিক বিষয়ে ব্রিফিং করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন। ২৭ নভেম্বর বিকেলে পৌনে ৪টায় ইনানী থেকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় ফিরবেন তিনি।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এ সম্মেলন উপলক্ষে ভারত মহাসাগর উপকূলবর্তী ১১টি দেশের নৌবাহিনীর জাহাজ মহড়ায় অংশ নেবে। বঙ্গোপসাগরে আসা বিদেশি জাহাজগুলো দিয়ে আসা নৌবাহিনীর সদস্যরা যাতে হোটেলে পৌঁছাতে পারেন, যে জন্য উখিয়ার রামু সংযোগস্থল রেজুখালের মোহনায় ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে, পুরোদমে বসানো হচ্ছে অস্থায়ী পন্টুন। রাষ্ট্রপতির উখিয়ায় আগমন সফল ও সার্থক করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) চাইলাউ মারমা জানান, রাষ্ট্রপতির সফর উপলক্ষে এরই মধ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পুলিশ ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। সুত্র: , এনটিভি