উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০৮/১০/২০২৫ ৭:২৩ এএম

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার নাম উঠলেই অনেকের মনে ভেসে আসে পাহাড়, বন আর সীমান্তের কথা। কিন্তু এই জনপদের এক অচেনা রত্নও আছে—সুপারি। এখন চলছে সেই সুপারির মৌসুম, আর উখিয়ার বাজারগুলোতেও চলছে রঙিন উৎসবের আমেজ।

স্থানীয়দের ভাষায়, উখিয়ার সুপারি মানেই লাল টুকটুকে সোনার দানা। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার সুপারি যাচ্ছে রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সবচেয়ে ব্যস্ত আর ঐতিহ্যবাহী হাটটি হচ্ছে রুমখাঁ মনির মার্কেট, যা স্থানীয়ভাবে সুপারি বাজার নামে পরিচিত।

রুমখাঁ মনির মার্কেটে সপ্তাহে দুই দিন—সোমবার ও বৃহস্পতিবার বসে বড় হাট। সকাল থেকেই সারি সারি ট্রাক, ভ্যান আর কুলির ভিড়ে মুখর হয়ে ওঠে বাজার। একেক হাটে লেনদেন হয় লাখ লাখ টাকার সুপারি।

বাজার ঘুরে দেখা গেল, কৃষকের মুখে হাসি, ব্যবসায়ীর ব্যস্ততা আর ক্রেতাদের দরদাম নিয়ে টানটান আলাপ। যেন এক উৎসবের আবহ। সুপারির সুবাসে উখিয়া এখন এক সম্ভাবনার নাম। রুমখাঁ মনির মার্কেট হয়ে উঠেছে সেই সম্ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু—যেখান থেকে একদিকে জীবিকার আলো, অন্যদিকে উজ্জ্বল হচ্ছে উখিয়ার ঐতিহ্যের মুখ।

রুমখাঁ মনির মার্কেটের ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম সওদাগর জানান, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন সুপারি কিনতে। তাদের সুবিধার্থে আমরা নিরাপত্তা ও লজিস্টিক সহায়তা দিয়ে থাকি। বাজারে যেন নির্বিঘ্নে বেচাকেনা হয়, সেটিই আমাদের লক্ষ্য।

জালিয়া পালং ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শাহ আলমের রয়েছে প্রায় দুই একর সুপারি বাগান। সারি সারি গাছে ঝুলে আছে পাকা, লালচে সুপারি।

তিনি বলেন, “এবার ফলন খুব ভালো হয়েছে। মনির মার্কেটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতা আসে, তাই ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছি। এতে কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছে।”

মনির মার্কেটের প্রবীণ ব্যবসায়ী রশিদ সওদাগর জানান, “আমরা এখানকার সুপারি বিক্রি করি রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বহু জেলায়। উখিয়ার সুপারির সাইজ বড়, রং উজ্জ্বল আর স্বাদে ভিন্ন। তাই সারাদেশে এর ব্যাপক সুনাম রয়েছে।”

সুপারির এমন চাহিদায় বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য শ্রমিক ও পরিবহন-নির্ভর অর্থনীতি। দিনে প্রায় কয়েক শতাধিক মানুষ সরাসরি এই বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত থাকেন।

রুমখাঁ মনির মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন বলেন, “এটি উখিয়া উপজেলার সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী বাজার। এখানকার লেনদেন স্বচ্ছ, ব্যবসায়ীরা নিরাপদ পরিবেশে সুপারি ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন। প্রশাসনের সহযোগিতা থাকায় কোনো বিশৃঙ্খলা হয় না।”

স্থানীয়রা জানান, বাজারটি শুধু সুপারির কেন্দ্র নয়, এটি উখিয়ার একটি অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্রও। এখান থেকে প্রতিদিন ট্রাকভর্তি সুপারি পাড়ি দেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, উখিয়ার নাম ছড়িয়ে দেয় সুপারি ব্যবসার মানচিত্রে।

স্থানীয় অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উখিয়ার কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে সুপারি এখন অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। প্রতি মৌসুমে হাজারো পরিবার সরাসরি ও পরোক্ষভাবে যুক্ত হয় এই ফলের সঙ্গে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা যুবকের বাংলাদেশি এনআইডি, কাজ করেন পরিবেশ অধিদফতরে

পরিচয় গোপন করে বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে রোহিঙ্গাদের বিদেশ যাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন ...

মেরিনড্রাইভে প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে পর্যটকের মৃত্যু

মেরিনড্রাইভে প্রাইভেট কার ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কে এম ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইমাম প্রশিক্ষণ দেবে তুরস্কের দিয়ানাত ফাউন্ডেশন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইমামদের প্রশিক্ষণ দেবে তুরস্কের দিয়ানাত ফাউন্ডেশন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধান ...