দিনমজুর ও সামান্য ইলেকট্রিক মিস্ত্রির পরিচয়ের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজারের উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া গ্রামের রশিদ আহমেদের পুত্র ইউনুসের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, তথাকথিত ‘সোর্স’ পরিচয় ব্যবহার করে সে গড়ে তোলে মাদক ব্যবসার একটি নিরাপদ নেটওয়ার্ক।
কয়েক বছরের ব্যবধানে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়ে ওঠা ইউনুসের রহস্যজনক উত্থান এখন এলাকা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, বছর কয়েক আগেও ইউনুস মানুষের বাসাবাড়িতে দৈনিক মজুরিতে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করতো।
অথচ হঠাৎ করেই তার জীবনযাত্রায় আসে নাটকীয় পরিবর্তন।
পাকা বাড়ি নির্মাণ, একাধিক জমি ক্রয়, কয়েকটি ডাম্প ট্রাক, দামি মোটরসাইকেল এবং বিলাসী চলাফেরা এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দেয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ইউনুস নিজেকে বিভিন্ন সময় মাদকবিরোধী অভিযানের ‘সোর্স’ হিসেবে পরিচয় দিতো।
এতে করে এলাকায় সে এক ধরনের অঘোষিত প্রভাব ও নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। অভিযোগ রয়েছে, এই পরিচয়ের সুযোগ নিয়ে সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করতো।
সূত্রগুলো আরও জানায়, ইউনুস নিজে খুব কমই ইয়াবা বহন করতো।
বরং একটি শক্তিশালী সহযোগী চক্রের মাধ্যমে পুরো ব্যবসা পরিচালনা করায় দীর্ঘদিন ধরে সে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে ছিল। তার মাদক চোরাচালান কার্যক্রমে একই এলাকার আবছার ও জাহাঙ্গীর নামের দুই ব্যক্তি সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইউনুসের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, মাদকের ভয়াল ছোবলে এলাকার তরুণ সমাজ ধ্বংসের পথে ধাবিত হচ্ছে।
এ ছাড়া এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, ইউনুসের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে বা প্রতিবাদ করতে চাইলে তাকে রাজনৈতিকভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া হয়।
এতে এলাকায় চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইউনুসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সরাসরি দেখা করবেন বলে জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি নুর মোহাম্মদ বলেন, ইউনুস নামে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র- মানবজমিন