কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা শিবির ও পার্শ্ববর্তী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য নির্মিত তিনটি যৌথ পাইপভিত্তিক পানি বিতরণ নেটওয়ার্ক উদ্বোধন ও আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার আয়োজিত উদ্বোধন ও হস্তান্তর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, বহুদিনের নিরাপদ পানির সংকট দূরীকরণে এই উদ্যোগ বাস্তবসম্মত সমাধান এনে দেবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীও এর সুফল পাবে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইবনে মায়ায প্রামাণিক। তিনি বলেন, মানবিক জরুরি সেবার সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন যুক্ত করার এই উদ্যোগ আগামী দিনের নিরাপদ পানি ব্যবস্থাপনার একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উখিয়া শাখার প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, স্থানীয় জনগণ ও ক্যাম্প—দুই অংশেরই পানির ঘাটতি ছিল। এই যৌথ নেটওয়ার্ক সে ঘাটতি অনেকটাই পূরণ করবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গাফুর উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের পানিবঞ্চিত মানুষ আজ তাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেল।
রোহিঙ্গা শিবিরে পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনিসেফ বাংলাদেশের পানি উপখাতের প্রধান পিটার জর্জ এল মা’স (বাংলায় উচ্চারণরূপে উল্লেখ) অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ মানবিক সেবাকে স্থায়ী উন্নয়ন ধারায় নিয়ে যাওয়ার একটি বাস্তব উদাহরণ।
অনুষ্ঠানে ডিএসকে, এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ, কেয়ার বাংলাদেশ ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার সূত্রে জানা যায়—ইউনিসেফের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত এই তিনটি যৌথ পাইপভিত্তিক পানি বিতরণ নেটওয়ার্ক থেকে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পটিবুনিয়া, গয়ালমারা ও মোচারখোলা গ্রামীণ এলাকা এবং নিকটবর্তী ১৫ নম্বর ও ১৬ নম্বর রোহিঙ্গা শিবিরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হবে।
তিনটি প্রকল্পে উপকারভোগীর সংখ্যা রয়েছে গয়ালমারা স্থানীয় মানুষ ১ হাজার ৩৪৪ জন এবং ক্যাম্প ১৬ –এর ১ হাজার ৮৫০ জন। পটিবুনিয়া: স্থানীয় মানুষ ১ হাজার ২৮১ জন এবং ক্যাম্প ১৬ –এর ২ হাজার ৯৫০ জন এবং মোছারখোলা: স্থানীয় মানুষ ৮৭৫ জন এবং ক্যাম্প ১৫ –এর ১ হাজার ৭০০ জন। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ এই উদ্যোগের সুবিধাভোগী হবেন।
সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও প্রকৌশল কর্মকর্তারা মনে করেন—নিরাপদ পানির স্থায়ী সমাধান নিশ্চিত হলে মানুষের জীবনমান উন্নত হবে এবং মানবিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।