উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬/০৩/২০২৩ ৮:৪৫ এএম

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী খালে বালু উত্তোলনের নামে চলছে পাহাড় কাটার মহা ধ্বংসযজ্ঞ। উক্ত খালে বালু উত্তোলনের নামে পাহাড়কাটার ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি পরিবেশবাদীদের।

ইতিপূর্বে স্থানীয় সচেতন মহল, জনপ্রতিনিধি ও পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মূখে থাইংখালী খাল ইজারা বন্ধ হলে ও পালংখালী খাল বালি উত্তোলনের জন্য কেন ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।

এ দুটি খালে কোনো বালু নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম, গফুর উদ্দীন চৌধুরী ও উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলমসহ এলাকাবাসী। গত দুই বছরে পালংখালী ও থাইংখালী খালের বালু উত্তোলনের নামে ৫৭টি পাহাড় নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে খালের বালু উত্তোলনকারীরা। এ দিকে পালংখালী খালে কোনো বালু না থাকলেও কেন বালু ইজারার নামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন এলাকার সচেতন মহল। তারা পালংখালী খালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মোজাফফর আহমদ জানান,পালংখালী খাল বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা দেওয়া হলে যে সব পাহাড় অবশিষ্ট আছে ভবিষ্যতে পাহাড় বলতে আর কিছুই থাকবে না। তাই অবিলম্বে পালংখালী খাল ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি সর্বমহলের।এমনকি থাইংখালীখালের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট জেলাপ্রশাসন বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

অন্যদিকে পালংখালী খালকে বালু উত্তোলনের জন্য ইজারা না দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছেন। থাইংখালী ও পালংখালী খালীতে গত বছর বালু উত্তোলনের নামে শত শত অবৈধ ট্রাক মিনিট্রাক ও ডাম্পার দিয়ে পাহাড় কেটে বিরানভূমি বানিয়েছিল বালু খেকোরা। এ ব্যাপারে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদফতর পাহাড়খেকোদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলায় প্রায় পাঁচশ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিল। এ সময় জব্দ করা হয় মাটি কাটার স্কেভেটর, বালু ভর্তি ডাম্পার এবং মিনিট্রাকসহ বালু ও মাটি কাটার সরঞ্জামাদি।পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায়,স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ নিরীহ লোকদের বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলা ও করেছেন এসব পাহাড়খেকো বালি সিন্ডিকেট।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান জানান, যেসব খাল ইজারা দেওয়ার মতো মনে হয়েছে মূলতঃ সেসব খালের বালু ইজারা দেয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। যদি অনুসন্ধান করে দেখা যায় বালু নেই খালে, বালু উত্তোলনের নামে পাহাড় কাটা হতে পারে তাহলে সেই খালের ইজারা বন্ধ রাখা হবে। এমনকি খালের বালু উত্তোলনের ইজারা নিয়ে পাহাড় কাটা হলে সাথে সাথে ইজারা বাতিল করা হবে। এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী থাইংখালী খালের ন্যায়, পালংখালী খালকে ইজারা না দিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এ ছাড়া পরিবেশবাদী সংগঠন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা, বেলা ও গ্রীণ কক্সবাজার যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, পালংখালী খালে কোনো বালু নেই। বালুশূন্য এই খাল ইজারা দেওয়া হলে বালুখেকোরা অতীতের ন্যায় পাহাড়ে পাইপ দিয়ে খাল থেকে পানি তুলে শরবত বানিয়ে বিশেষ কায়দায় বালু বের করে পাহাড় ধ্বংস করবে।তাই পালংখালীখালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবিতে এলাকায় প্রতিবাদ সভা বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছেন স্থানীয়রা।

কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলন বাপার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, সহ সভাপতি এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন ও সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, প্রাণ প্রকৃতি, পাহাড় ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের হাত থেকে বাচাঁতে পালংখালী খাল বালি উত্তোলনের নামে ইজারা বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হোক।

পাঠকের মতামত