উখিয়ার দুটি কলেজে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। শিক্ষার্থীদের পাসের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় এলাকায় চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
উখিয়া ডিগ্রি কলেজে মোট ৫৪৯ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১১২ জন। অন্যদিকে, উখিয়া সরকারি মহিলা কলেজে ৭৭৪ জনের মধ্যে পাস করেছে ১৭৬ জন।
দুটি প্রতিষ্ঠানের এমন নিম্ন ফলাফলে হতাশ অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা।
ফল প্রকাশের পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা।
অনেকে একে “উখিয়ার শিক্ষাব্যবস্থার ব্যর্থতা” হিসেবে দেখছেন।
উখিয়া নিউজের সম্পাদক ওবায়দুল হক চৌধুরী তিনি তার স্ট্যাটাসে লিখেন,
এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। আগের মতো বোর্ডের পার্সেন্টেজ প্রতিযোগিতা আর নেই। গতানুগতিক এ+ পাওয়ার দৌড়ও শেষ। এখন সত্যিকারের মেধাবীরাই ভালো করবে।
একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন—
> এনজিও এবং পরাশুনায় অনাগ্রহ—দুইটাই এই ফলাফলের কারণ।
আরেকজন বলেন—
> ছাত্র-শিক্ষক উভয়েই শিক্ষার চেয়ে অর্থকেই এখন গুরুত্ব দিচ্ছে।
আরেকজনের মন্তব্য,
> এনজিওর চাকরি বাচ্চাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের নেশা বাড়িয়েছে, পড়াশোনার মনোযোগ কমেছে।
স্থানীয় তরুণ রশেদুল ইসলাম লিখেছেন—
> ক্ষমতার লোভে আমাদের নতুন প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ফেসবুক আর মোবাইল গেমে সময় নষ্ট করেই ফলাফল খারাপ হচ্ছে।
একজন অভিভাবক মন্তব্য করেছেন—
> দিন-রাত চায়ের দোকানে বসে অনলাইনে জুয়া খেলে যারা, তারাই ফেল করছে। যারা মনোযোগ দিয়ে পড়েছে, তারাই পাস করেছে।
অন্যদিকে, কিছু মন্তব্যে দেখা গেছে প্রাথমিক পর্যায়ের দুর্বল শিক্ষাব্যবস্থাকেও দায়ী করা হচ্ছে।
একজন লিখেছেন—
> প্রাথমিকের দুর্বল ভিত্তি ঠিক না করলে পরবর্তী ধাপেও একই ফলাফল হবে। শিক্ষার মূলভিত্তিতেই ঘাটতি।
আরেকজন বিশ্লেষণ করে বলেন—
> উপজেলার সিনিয়র ভাগ দুর্বল ছাত্রদের উখিয়া কলেজে ভর্তি করায় ফলাফল খারাপ। ভালো ছাত্ররা চলে যায় নামকরা কলেজে, ফলে স্থানীয় কলেজগুলো পিছিয়ে পড়ে।
স্থানীয় শিক্ষাবিদদের মতে, শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহ, সামাজিক বিভ্রান্তি ও এনজিওনির্ভর জীবনযাপনের কারণে তরুণদের পড়ালেখায় মনোযোগ কমছে।
তারা বলেন, এক সময় উখিয়ার কলেজগুলো ভালো ফল করত। এখন শিক্ষার্থীরা বইয়ের চেয়ে স্মার্টফোনে বেশি সময় দেয়। শিক্ষক-অভিভাবক উভয়েরই নজরদারি জরুরি।
উখিয়ার সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি নজরদারি বাড়ানো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা এবং পরিবারে পড়ালেখার পরিবেশ তৈরি করলেই এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।