প্রকাশিত: ২২/০৪/২০২২ ২:৫৯ পিএম

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
ইয়াবা টেবলেট পাচারের দায়ে ৩ টি পৃথক মামলায় ৪ ইয়াবাকারবারীকে মোট ২৪ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদন্ড অনাদায়ে প্রত্যেককে আরো ২ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ২১ এপ্রিল কক্সবাজারের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান পৃথক তিনটি মামলায় এ রায় দেন।

তিনটি মামলার প্রথমটির সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো : ২০১৮ সালের ২১ মে বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং নয়াপাড়া কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে হোয়াক্ষ্যং বাজারে থাকা ভাসমান বেদে দম্পতি মৃত রাজ্জাকের পুত্র ইয়াবাকারবারী সাইফুল মিয়া (৪০) এবং তার স্ত্রী হাওয়া বিবি প্রকাশ বুড়ি (৩৮) কে আটক করে। আটককৃত ২ জনের কাছ থেকে ১৫ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং হাইওয়ে পুলিশের এএসআই রাজু কান্তি দাস বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৪৫/২০১৮ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ২৬১/২০১৮ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ৭২৭/২০১৯ ইংরেজি।

মামলাটির অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য ও জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল যাচাই, যুক্তিতর্ক সহ সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১), টেবিল ৯(খ) ধারায় আসামী সাইফুল মিয়াকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং হাওয়া বিবি প্রকাশ বুড়িকে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড দেন। একইসাথে উভয় আসামীর প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।

দ্বিতীয় মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো : ২০১৮ সালের ২০ মার্চ রাত ৮ টা ৫ মিনিটের দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী কাস্টমস চেকপোস্টে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে হাইওয়ে পুলিশের একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং এর কোরবানিয়া ঘোনার সমি উদ্দিনের পুত্র মোঃ সেলিম উদ্দিন (২৯) কে আটক করে। আটকের পর তার কাছ থেকে ১০ হাজার পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপ হাইওয়ে পুলিশের এসআই রাজেশ বড়ুয়া বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় উখিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৩০/২০১৮ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ১০১/২০১৮ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ২০৮৭/২০১৮ ইংরেজি।

মামলাটির অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য ও জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল যাচাই, যুক্তিতর্ক সহ সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১), টেবিল ৯(খ) ধারায় আসামী মোঃ সেলিম উদ্দিনকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন। রায়ে বিজ্ঞ বিচারক অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।

তৃতীয় মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো : ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল বিকেল ৩ টা ৪৫ মিনিটের দিকে টেকনাফের দমদমিয়া বিজিবি’র চেকপোস্টে বিজিবি’র একটি টিম এক অভিযান চালিয়ে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের পশ্চিম ডেইল পাড়ার মৃত মোঃ হোছনের পুত্র কবির আহমদ প্রকাশ অলি আহমদকে আটক করে। আটকের পর তার কাছ থেকে ১ হাজার ১৮৭ পিচ ইয়াবা টেবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে টেকনাফস্থ ২ নম্বর ব্যাটালিয়ান বিজিবি’র নায়েক সুবেদার মোঃ আবদুল মালেক
বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় টেকনাফ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার টেকনাফ থানা মামলা নম্বর : ৭২/২০১৬ ইংরেজি, জিআর মামলা নম্বর : ২১৫/২০১৬ ইংরেজি এবং এসটি মামলা নম্বর : ১৪৭২/২০১৬ ইংরেজি।

মামলাটির অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য ও জেরা, আলামত প্রদর্শন, রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফল যাচাই, যুক্তিতর্ক সহ সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ-১ মাহমুদুল হাসান ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১), টেবিল ৯(খ) ধারায় আসামী কবির আহমদ প্রকাশ অলি আহমদকে ৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন। রায়ে বিজ্ঞ বিচারক অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ২ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।

তিনটি মামলার সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামী পলাতক রয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারের পর প্রদত্ত সাজা কার্যকর করা হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। রাষ্ট্র পক্ষে মামলা ৩টি পরিচালনা করেন এপিপি এডভোকেট আবদুর রউফ।

পাঠকের মতামত