প্রকাশিত: ১৮/০৫/২০১৬ ৭:২৯ এএম
আমি একটি বড় সমস্যার মধ্যে আছি। সমস্যাটি হচ্ছে- আমার পরিবারে আমি আমার বাবা আর একটি বোন নিয়ে অনেক সুখেই ছিলাম। কিন্তু আমি কিছুদিন যাবত দেখছি- আমার মা ফোনে তাঁর আগের বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে। আমি আর আমার বোন অনেকদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে আম্মু বাইরে গিয়ে গিয়ে কথা বলে। আমি ঐ লোককে ফোনে বলেছিলাম- আপনি আর ফোন দেবেন না। ঐ লোক তবুও ফোন দেয়। এ ব্যাপারে আমার বাবা জানে না। বাবা সারাদিন অফিসে থাকে, তাই এ ব্যাপারে জানে না। আমার কোনো মামা নেই যে এই কথাটি শেয়ার করতে পারবো। আমার খালা আছে, কিন্তু খালা এসবে কিছু মনে করে না। এ মুহূর্তে আমার কী করা উচিত? আমি ঐ নম্বরটা ব্ল্যাক লিস্টে রেখেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয় নি। মা এখনো কথা বলে। আমি একদিন লুকিয়ে কথা শুনেছিলাম। আম্মু ঐ লোকটিকে ভালোবাসে মনে হয়। এ ব্যাপারে মায়ের সঙ্গে কথা বললে মা অনেক রাগারাগি করে। এখন আমি কী করতে পারি। আমি এর একটি সমাধান চাই। –
ANS

আমি যা বলছি, খুব মন দিয়ে শোন ভাইয়া। চিঠি পড়ে বুঝতে পারছি যে তোমাদের দুই ভাইবোনেরই বয়স খুব কম আর এই বিষয়টি নিয়ে তোমরা খুব কষ্টে আছো। কিন্তু নিজেদের ভালো চাইলেও কিছু ব্যাপার খুব ভালো করে বুঝতে হবে তোমাকে।

প্রথমত ভাইয়া, হ্যাঁ পরকীয়া খুব খারাপ জিনিস। কিন্তু মা-বাবার দাম্পত্য সম্পর্ক একান্তই তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, এটা নিয়ে তোমরা কোন কথা বলার অধিকার রাখো না। একটি মানুষ অনেক কারণেই পরকিয়ায় জড়িয়ে যায়, তার মাঝে অন্যতম কারণ এই যে মানুষটি তার জীবনসঙ্গীর সাথে সুখী নয়। হতে পাড়ে তোমার মায়ের ব্যাপারটাও এমন। আমি আবারও বলছি, পরকীয়া খুবই খারাপ একটি বিষয়। এটা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। কিন্তু তোমাদেরকে যা করতে হবে সেটা খুবই ভেবেচিন্তে ও ঠাণ্ডা মাথায়।

প্রথমত, কিছু বিস্তারিত না জেনেই মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করা চলবে না। যত যাই হোক, তিনি মা। দ্বিতীয়ত আজকাল পরকীয়ার কারণে অপরাধের হার অনেক বেড়েছে। মা নিজের বাচ্চাদের খুন করেছে প্রেমিকের সহায়তা নিয়ে, এমনও বিচিত্র নয়। তাই তোমাদের থাকতে হবে খুবই সাবধানে। বাবাকে এইসব কথা বলতে যাওয়া তোমাদের উচিত হবে না, বলতে গেলে বাবা বিশ্বাস নাও করতে পারেন। তোমার খালা এসবকে ঠিক মনে করেন, এতে অবশ্য বোঝা যাচ্ছে যে তোমার মায়ের পরিবারে ন্যায় অন্যায়ের বোধ কম। সেক্ষেত্রে মনে হয় নানা নানীকে বললেও উপকার ভাবে। তাছাড়া তাঁরা আছেন কিনা, সেটাও আমি জানি না। নানা-নানীর মাধ্যমে মাকে একবার বোঝানোর চেষ্টা করতে পারো। যদিও মনে হয় না এতে কাজ হবে।

যাই হোক, তোমরা যেটা করতে পারো, সেটা হচ্ছে মায়ের অনুপস্থিতে বাবাকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলতে পারো। তোমাদের দুই ভাই বোনের নিরাপত্তার জন্য হলেও এটা দরকার। বাবা হয়তো প্রথমে বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু তাঁকে প্রমাণ দিতে হবে। তবে হ্যাঁ, একবার বাবা জেনে যাবার পর খুব অশান্তি হবে, মা বাবার ডিভোর্স হয়ে যেতে পাড়ে, মা তোমাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবভার শুরু করতে পারেন, হয়তো গিয়ে ওই লোকটিকে বিয়েও করে ফেলতে পারেন। তোমরা কি এই ব্যাপারটির জন্য তৈরি? আমার মনে হয় না।

আমার মনে হয় আপাতত কিছুদিন চুপচাপ অপেক্ষা করো। সত্য কখনো চাপা থাকে না, বাবা একদিন নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন আর নিজের মত করেই স্ত্রীর এই ব্যাপারটি মীমাংসা করবেন। আবার অন্যদিকে মায়ের যে তথাকথিত প্রেমিক, এইসব লোকেরা কখনো ভালো হয় না। এমন ফোনে ফোনে সম্পর্ক কিছুদিন টেকে, তারপর আবার ভেঙ্গেও যায়। তোমার মায়ের সম্পর্কটিও ভাঙবে আশা করি। তাই আমি পরামর্শ দিব, কোন বড় পদক্ষেপ নেয়ার আগে আপাতত কিছুদিন অপেক্ষা করো। দেখো যে অবস্থা কোনদিকে যায়।

পরামর্শ দিয়েছেন-
রুমানা বৈশাখী
লেখক ও রন্ধনশিল্পী
এডিটর ইন চার্জ (প্রিয় লাইফ-সায়েন্স ও প্রিয় আনসার)
প্রিয়.কম

পাঠকের মতামত

একটি পেঁয়াজের ওজন ৯ কেজি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ ফলাতে সক্ষম হয়েছেন ব্রিটিশ এক কৃষক। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ...

বাতিঘরের দ্বীপ কুতুবদিয়া

চিকচিক বালি নীল জলরাশি ঢেউয়ের গর্জনের সমুদ্দুর পাখির ডাকে সকালের রোদ্দুর আকাশের বিশালতা গায়ে চাদর ...