প্রকাশিত: ০৯/১২/২০২১ ৯:২৬ এএম

খুলনায় একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষে ঢুকে ১১ বছরের মেয়ের সামনে মাকে (২৮) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মো. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর শহীদ হাদিস পার্কের পার্শ্ববর্তী ৬৬নং লোয়ার যশোর রোডের হোটেল সুন্দরবনে এ ঘটনা ঘটে। খুলনা সদর থানা পুলিশ ওই এসআইকে গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে।

অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বিষুষ্ণপুর গ্রামের মো. আতিয়ার রহমানের ছেলে। তিনি খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত। গতকাল বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার বাজিকরেরখণ্ড গ্রামের ওই নারী অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর জন্য মঙ্গলবার বিকেলে খুলনায় আসেন। সঙ্গে ছিল তার মেয়ে ও ২৬ বছর বয়সী ভাগ্নে। কিন্তু ওইদিন তারা ডাক্তারের সিরিয়াল পাননি। এরপর ওই নারীর ভাগ্নে তাকে জানান, সুন্দরবন আবাসিক হোটেলের মালিক মিশারুল ইসলাম মনির তার পরিচিত। সেখানে নিরাপদে তারা থাকতে পারবেন এবং পরদিন সকালে ডাক্তার দেখিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।

এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ওই নারী ও তার মেয়ে হোটেল সুন্দরবনের তৃতীয় তলার ৩১৩নং কক্ষে ওঠেন। আর তার ভাগ্নে একই হোটেলের ৩০৮নং কক্ষে ওঠেন। রাত সোয়া ২টার দিকে হোটেল বয় গোলাম মোস্তফা ওই নারীর কক্ষের দরজায় নক করে পুলিশ পরিচয় দেয়। তার সঙ্গে ছিলেন এসআই জাহাঙ্গীর আলম। ওই নারী দরজা খুললে হোটেল বয় কক্ষে ঢুকে জানতে চায় মেয়েটি তার নিজের মেয়ে কিনা। মেয়েটি তার নিজের বলে জানান ওই নারী। তখন এসআই জাহাঙ্গীর হোটেল বয়কে হুমকি-ধমকি দিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন। এরপর কক্ষের দরজা আটকে দিয়ে মেয়ের সামনে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন তিনি। এর আগে জাহাঙ্গীর ওই শিশুটিকেও ধর্ষণের হুমকি দেন।

এজাহারে বলা হয়, ধর্ষণের সময় ওই নারী চিৎকার শুরু করলে ওই হোটেল বয়সহ অন্য কর্মচারীরা কক্ষের সামনে চলে আসেন। তখন জাহাঙ্গীর বেরিয়ে যান। পরে ওই নারীর ভাগ্নে হোটেল মালিককে মোবাইল ফোনে ঘটনাটি জানান। হোটেল মালিক দ্রুত হোটেলের মেইন গেটে তালা লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ ও খুলনা থানা পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থলে যায়।

খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, এ ঘটনায় ভোররাত ৪টার দিকে ওই নারী বাদী হয়ে খুলনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আবদুল হান্নান মোল্লা জানান, ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।

খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ডেপুটি কমিশনার বি এম নুরুজ্জামান জানান, ঘটনার সময় এসআই জাহাঙ্গীর মাদকাসক্ত এবং তিনি একাই ছিলেন। ওই সময় তার ডিউটি ছিল না।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মো. মোমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, এর আগে নগরীর পিটিআইতে ভারত থেকে দেশে ফেরা এক নারীকে কোয়ারেন্টাইনে থাকা অবস্থায় ধর্ষণ করেছিলেন এক পুলিশ সদস্য। সেই পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তারের ছয় মাসের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে আসেন।

পাঠকের মতামত