প্রকাশিত: ১২/১২/২০২১ ২:১৮ পিএম

যুক্তরাষ্ট্রে র‍্যাবের বর্তমান ও সাবেক ৭ কর্মকর্তার নিষেধাজ্ঞা জারির পর আবারও আলোচনায় এসেছে কক্সবাজারের টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত পৌর কাউন্সিলর একরামের নাম। গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় তার পকেটে থাকা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা বড় মেয়ের সাথে কথোপকথন ভাইরাল হয়ে পড়ে।

গত শুক্রবার র‍্যাবের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনে’ জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক ও বর্তমান আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং র‌্যাব-৭-এর সাবেক কমান্ডিং অফিসার মেফতাহ উদ্দিন আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, মেফতাহ উদ্দিন কাউন্সিলর একরামুল হকের ‘বিচারবহির্ভূত হত্যায়’ জড়িত।

২০১৮ সালের ২৬ মে একরাম নিহত হন। তখন একরামের বিরুদ্ধে ইয়াবা কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।

কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুলের স্ত্রী আয়েশা একরাম শনিবার বলেন, ‘গত তিন বছরে আমার স্বামী একরাম হত্যার বিচার দূরে থাক, মামলাও করতে পারিনি। হত্যাকাণ্ডের পর থানা ও আদালতে গিয়েও মামলা করা সম্ভব হয়নি। এখনো বিচার চাইতে পারি না।’ তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘বিচারের ক্ষেত্রেও বৈষম্য। এটা মানা যায় না।’

আয়েশা অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং মোটরসাইকেল টেকনাফ থানায় থাকলেও তা পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি। সেই ঘটনার অনেক কিছু ওই মোবাইল ফোনে রেকর্ড হয়ে গেছে।

আয়েশা একরাম বলেন, ‘স্বামীকে হারিয়ে দুই মেয়েকে নিয়ে কী কষ্টে দিন যাপন করছি, একমাত্র আমিই জানি। আমার স্বামী ইয়াবা কারবারি হলে তো আমাদের কাছে প্রচুর টাকা-পয়সা থাকত। অথচ একরাম এমন কোনো কিছু রেখে যাননি, যা দিয়ে সংসার ভালোভাবে চলে।’

একরামের বড় মেয়ে তাহিয়া এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছোট মেয়ে নাহিয়ান অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আয়েশা বলেন, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পর দেবর এহতেশামুল হক বাহাদুর টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি মাসিক ভাতা পান ১০ হাজার টাকা। তিনি ভাতার সেই টাকা তাঁর দুই ভাতিজি তাহিয়া ও নাহিয়ানের পড়ার খরচ হিসেবে দেন। এ ছাড়া পৈতৃক সূত্রে পাওয়া একরামের একটি দোকান থেকে ভাড়াবাবদ মাসে ১০ হাজার টাকা পান। এ দিয়ে তাঁদের সংসার চলছে।

কাউন্সিলর একরাম ছাত্রলীগ নেতা থেকে পরে যুবলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হন। আয়েশার অভিযোগ, ঘটনার পর তিনি সরকার ও সরকারি দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু পদে পদে বাধার কারণে কারো সঙ্গে আর যোগাযোগ করা হয়নি। সূত্র-কালের কন্ঠ।

পাঠকের মতামত