উপজেলা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ২১/১২/২০২২ ১০:০০ এএম

আজ ২১ ডিসেম্বর ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়ক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সড়কটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সারাদেশে দুই হাজার কিলোমিটার সড়ক-মহাসড়কের পাশাপাশি ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়ক উদ্বোধনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের কক্সবাজার নির্বাহী প্রকৌশলী।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কক্সবাজার সূত্র জানিয়েছেন, চকরিয়া উপজেলা ও লামা উপজেলার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের মধ্যদিয়ে এগিয়ে গেল এই অঞ্চলের মানুষ। লামা উপজেলার সাথে চকরিয়ার সড়ক যোগাযোগ থাকলেও সড়ক প্রশস্তকরণ না থাকায় যাতায়তে দূর্ভোগ পোহাতে হতো সাধারণ মানুষের। কিন্তু ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়ক নির্মিত হওয়ায় এ দুই উপজেলার মানুষের ভাগ্য বদলিয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে যান চলাচল ও মানুষের যাতায়তের জন্য এই সড়কটি খুলে দেওয়া হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিভাবে উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় (চট্টগ্রাম জোন দ্বিতীয়) পর্যায় জেলা মহাসড়কটি চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের শান্তিবাজার থেকে লামা উপজেলার ইয়াংচা পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কের প্রশস্ত ৫.৫০ মিটার। সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ১১টি কালভার্ট নির্মাণ করা রয়েছে। সড়কটি বেশিরভাগ এলাকা চকরিয়া উপজেলায় পড়েছে। এরমধ্যে চকরিয়া উপজেলায় ১৭.৬০ কিলোমিটার ও লামায় ১.৪০ কিলোমিটার। জেলা মহাসড়কটির কাজ ২০১৮ সালের ১ জুলাই শুরু হয়ে সমাপ্ত হয় ২০২২ সালের ৩০ জুনে। সড়কের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫ কোটি ২২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। সড়কের নির্মাণকারী সংস্থা ‘রাব আরসি’ প্রাইভেট লিমিটেড।

স্থানীয়রা জানান, ইয়াংচা-মানিকপুর-শান্তিবাজার জেলা মহাসড়কটি নির্মিত হওয়ায় কক্সবাজারের চকরিয়া ও বান্দরবানের লামা উপজেলার মানুষের সেতুবন্ধন তৈরী হয়েছে। ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে গ্রামীণ জনগোষ্টির। এ সড়কের আশপাশের ইউনিয়ন গুলো কৃষকের উৎপাদিত পন্য দ্রুত সময়ে পৌছাতে পারবে শহরে। ফলে উৎপাদিত কৃষি পন্যের চাহিদামতো মূল্য পাবে কৃষকরা। সরকারের স্থায়িত্বে উন্নয়নের সুফল প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে সহজে।
এছাড়াও দূর্গম পাহাড়ের বুকে পিচঢালা সুগমপথ। সবুজের মাঝে আঁকাবাঁকা সড়ক যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি তা পাল্টে দিয়েছে পাহাড়ি জীবনও। গত এক দশকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। পাহাড়িদের ভাগ্যেও চাকা ঘুরে গেছে সড়কটির কারণে। পাহাড়ি জমিতে কলা, আম, হলুদ, মরিচ, আদা ও কাঁঠাল চাষ করেন। সড়ক যোগাযোগ ভাল না থাকায় অনেক সময় এসব উৎপাদিত কৃষিপন্য মাতামুহুরী নদী পথ দিয়ে চকরিয়ায় আনা হতো। সকালের পন্য বিকালে বিক্রি হওয়ায় উচিত মূল্য পেতে না কৃষকরা। বর্তমানে সড়কটি নির্মিত হওয়ায় যাতায়ত যেমন সহজ হবে, তেমনি উৎপাদিত পন্য শহরে সহজে নিতে পারবে।
চকরিযা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, সড়কটির উন্নয়নের ফলে চকরিয়া হতে লামা, আলীকদম উপজেলার সাথে দূরত্ব কমার পাশাপাশি ফাঁসিয়াখালী, সুরাজপুর-মানিকপুর, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল ও বরইতলী ইউনিয়ন সমূহের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। এছাড়া এসব জনপদে উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজেই দেশের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছানো যাবে।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন বলেন, সড়কটি অপ্রশস্ত ও কিছু অংশ বিছিন্ন থাকায় বর্তমান সরকার সড়কটিকে ৩.৭০ মিটার হতে ৫.৫০ মিটারে প্রশস্তকরণ সহ ১৯ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পটি গ্রহণ করেন। জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্পেনতুন সড়ক নির্মাণ ৮ কিলোমিটার কালভার্ট নির্মাণ ১১টি, রিজিড পেভমেন্ট ৩০০মিটার ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট প্রায় ১১.৫০ কিলোমিটার, সসার ড্রেইন ১৫০০মিটার, কংক্রিট স্লোপ প্রটেকশন এবং আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল করা হয়।
তিনি আরও বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজর হওয়ায় চকরিয়া উপজেলা, লামা উপজেলা ও আলীকদম উপজেলার জনগণ উপকৃত হবে। এ অঞ্চলের উৎপাদিত পন্য ও সেবা সমূহ দ্রুত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহনের মাধ্যমে পৌছে দিতে পারবে

পাঠকের মতামত