বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমার সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি এলাকা থেকে অপহরণ করা আট জেলেকে দুই দিনেও ফেরত দেয়নি মিয়ানমার নৌবাহিনী।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে সেন্টমার্টিনের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের বঙ্গোপসাগর থেকে তাদের অহেতুক ধরে নিয়ে গেছে তারা। এসময় মাছ শিকাররত ওই জেলেদের ফিশিং ট্রলারটি সাগরে ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে শুক্রবার সকালে তাদের ফেরত দেয়া হবে বলে জানিয়েছিল মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনী বিজিপি। কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাদের ফেরত পাঠানো হয়নি।
অপহৃত জেলেরা হলেন- টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ বাজার পাড়া এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রশিদ মাঝি (৪০), জালিয়াপাড়া এলাকার মৃত হাসানের ছেলে সৈয়দ করিম (৪০), কোনার পাড়া এলাকার নূরুল আমিনের ছেলে নূর হাসান (২৮), ক্যাম্পপাড়া এলাকার আব্বাসের ছেলে মোহাম্মদ উল্লাহ (৫৫), মাঝরপাড়া এলাকার ফজলুলের ছেলে জামাল হোসেন (৩৭), মিস্ত্রিপাড়া এলাকার মো. কালুর ছেলে দিল মোহাম্মদ (৩৬) ও ডাঙ্গরপাড়া এলাকার জাফরের ছেলে সাদেক (৩৫) এবং একই এলাকার ফজল আহাম্মদের ছেলে জাকের (৫৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী জেলেদের বরাত দিয়ে অপহৃতদের পরিবার জানায়, বঙ্গোপসাগরের ওই এলাকায় কয়েকটি ফিশিং ট্রলার সাগরে মাছ শিকারকালে হঠাৎ করে মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ এসে ধাওয়া করে। অন্য ট্রলারগুলো পালিয়ে গেলেও টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ মাঝের পাড়া এলাকার আবুল হোসেন মাঝির মালিকানাধীন ট্রলারটি ধাক্কা দিয়ে ডুবিয়ে দেয় ধাওয়াকারীরা। এ সময় ফিশিং ট্রলারে থাকা আট জেলেকে তুলে নিয়ে যায় তারা। অপহৃত জেলে পরিবারে উৎকন্ঠা বিরাজ করছে।
ট্রলার মালিক আবুল হোসনে মাঝি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়ে অন্য ট্রলারের সহযোগিতায় সাগরে তল্লাশি চালিয়ে ডুয়ে যাওয়া ট্রলারটির খোঁজ মিলে। কয়েকটি ট্রলারের সাহায্যে তা টেনে রাতে খুলে নিয়ে আসা হয়।
টেকনাফস্থ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছিলেন, বিষয়টি শোনার পর দোভাষী দিয়ে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সাথে যোগাযোগ করা হয়। আট জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শুক্রবার সকাল ১০টায জেলেদের হস্তান্তর করা হবে বলে জানায় বিজিপি।
কিন্তু জেলেদের ফেরত দেয়ার বিষয়ে বিজিপি কি বলছে তা জানতে শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত বিজিবি কর্মকর্তা আবুজার আল জাহিদের ফোনে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অপহৃতদের পরিবার ও ট্রলার মালিক সূত্র বলেছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত অপহৃতদের ফেরত দেয়া হয়নি।