প্রকাশিত: ১৫/০৯/২০১৯ ৯:১৪ পিএম

নয়া দিগন্ত
সহকর্মী অধ্যাপিকাকে নিয়ে ফুর্তি করার সময় এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়ে গণধোলাই খেয়েছেন এক অধ্যক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার বিকাল ৫ টার দিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের শহীদ ক্যাপ্টেন সামসুল হুদা মৃধা সড়কের (বিমানবন্দর সড়ক) শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ পরিষদের কার্যালয়ে। আটককৃতরা হলেন সদ্য সরকারী হওয়া সৈয়দপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও আওয়ামীলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন খোকন এবং তারই কলেজের সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা সুলতানা নওরোজ। ঘটনার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। এতে তাদের আটক ও গণধোলাইয়ের খবরে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় বিষয়টি।

এলাকাবাসীর বর্ণনায় জানা যায়, স্মৃতিস্তম্ভ পরিষদের অফিসটি প্রায় সময়ই বন্ধ অবস্থায় থাকে। মাঝে মাঝে পরিষদের সদস্যরা সন্ধা রাতে আসেন। কিন্তু খোকন স্যার স্মৃতিস্তম্ভ পরিষদের আহ্বায়ক হওয়ায় অফিস খোলা অবস্থায় নিয়মিত আসেন এই অফিসে। কিন্তু তার বাইরেও তিনি তার কারে করে ওই অধাপিকাকে নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভ পরিষদের কার্যালয়ে প্রায়ই নির্জন দুপুর বেলায় আসতেন। এসে তালাবদ্ধ অফিস ঘরটি নিজেই খুলে ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে অনেক সময় ধরে অবস্থান করতেন। বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ কিছুদিন থেকেই গুঞ্জনের সৃষ্টি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন দুপুরে আবারও তারা ওই স্থানে আসেন। তাদের আসার প্রায় ১ ঘন্টা পর কয়েকজন স্থানীয় যুবক দেলোয়ার, পাপ্পু, সেলিমের নেতৃত্বে প্রায় ৬-৭ জন বিষয়টি প্রত্যক্ষ করতে অফিসের জানালা দিয়ে উকি মেরে দেখেন তারা অসামাজিক কাজে লিপ্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন মোবাইল ফোনে তাদের অন্তরঙ্গ অবস্থার দৃশ্যও ধারণ করে। এক পর্যায়ে যুবকেরা অফিসের দরজায় বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয় এবং ইতোমধ্যে আশপাশের লোকজনের ভীর জমে যায় অফিস চত্বরে। ফলে মুহুর্তেই খবরটি ছড়িয়ে পড়ে মুখে মুখে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায় অধ্যক্ষ খোকন বাইরে লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে বিছানা থেকে কে কে বলে ধরপড়িয়ে উঠে দাড়াচ্ছেন। অন্যটিতে তিনি লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দ্রুততার সাথে আন্ডার ওয়ার পড়ছেন।

এরপর আগতদের মধ্যে অতি-উৎসাহীরা অধ্যক্ষকে আটক করে গণধোলাই দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আল মামুন সরকার ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। অধ্যক্ষ কাউন্সিলরের কাছে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়ায় কাউন্সিলর উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে আটক দুইজনকে ছেড়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।

অধ্যক্ষ সাখাওয়াত হোসেন খোকনের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এবং বাড়িতে গিয়ে তাকে না পাওয়ায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর আল মামুন সরকার জানান, স্যারকে বিবস্ত্র অবস্থায় এলাকাবাসীর হাত থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পাশা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মানুষের মুখে শুনেছি। তাছাড়া এ ব্যাপারে আর কোন অভিযোগ পাইনি।

পাঠকের মতামত