উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ০১/০৩/২০২৩ ৬:১৫ পিএম

অসচেতনতার কারণে অগ্নিকাণ্ড প্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। ২০২১ সালের ২১ মার্চ, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে উখিয়ার তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দশ হাজার ঘর পুড়ে যায়। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান ১৫ জন।

চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জানুয়ারি ২০২১ থেকে ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত ২২২টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এর মধ্যে ৯৯টি দুর্ঘটনাজনিত। ৬০টি নাশকতামূলক ও ৬৩টির কারণ জানা যায়নি।

বারবার অগ্নিকাণ্ডের কারণে ক্যাম্প প্রশাসন ও কর্মরত সহযোগী সংস্থাগুলোর সম্মন্বয়ে নেওয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ।

২৮ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) টেকনাফের তিনটি ক্যাম্প-২৪, ২৫ ও ২৭ এবং হ্নীলা ইউনিয়নের স্থানীয়দের মাঝে উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডস্ ইন ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ (এফআইভিডিবি) ১০৭৩৮টি রোহিঙ্গা ও ১৭৬২টি স্থানীয় পরিবারের জন্য ২৫০০টি অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছে।

আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ডব্লিউ এইচ এইচ (ওয়েলথহাঙ্গারলাইফ) ও বিএমজেড এর অর্থায়নে বাস্তবায়িত এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগী পরিবারগুলো থেকে ২৫০০ দলনেতা (প্রতি ৫ পরিবারে একজন) নির্বাচন করে ইতোমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে অগ্নিনির্বাপক কৌশল ও নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার নিয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ।

গত বছরের ৩ মার্চ দুর্ঘটনাজনিত অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যায় ২৬নং ক্যাম্প এর বাসিন্দা নুর কলিমার (২৬) ঘর।

মায়ানমারের মন্ডু থেকে ২০১৭ সালে পালিয়ে আশ্রিত এই রোহিঙ্গা নারী নির্বাপক যন্ত্র ও আগুন প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ পেয়ে বলেন, অইদিন যদি এই যন্ত্রটা থাকতো আমার অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র রক্ষা পেতো। এখন পেয়েছি, ভালো লাগছে। সাহস নিয়ে আগুন প্রতিরোধ করবো।

২৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাশেম বলেন, আগুন আমাদের ভয়ের কারণ। এখন সেই ভয় কিছুটা কমেছে। সরকারের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে সতর্ক কীভাবে থাকতে হয় তা জানতে পারছি।

২৭নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করে ক্যাম্প-ইন-চার্জ ও সিনিয়র সহকারী সচিব তানভির আহমেদ বলেন, এফআইভিডিবি’র উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। আগুনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সহায়তা করবে এই কার্যক্রম। রোহিঙ্গারা যাতে এই মূল্যবান যন্ত্রগুলো বিক্রি না করে রক্ষণাবেক্ষণ করে রাখে তা নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।

এছাড়াও ২৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প-ইনচার্জ ও সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং ২৫নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্যাম্প-ইনচার্জ ও উপ-সচিব আব্দুল হান্নান এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

এফআইভিডিবি’র নির্বাহী পরিচালক বজলে মুস্তফা রাজী জানান, রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মাঝে সম্প্রীতি তৈরির পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ডসহ যেকোনো দুর্ঘটনা মোকাবিলায় সমন্বিত তৎপরতা বৃদ্ধি করতে এফআইভিবির এই প্রয়াস।

এফআইভিডিবি’র কর্মসূচি সমন্বয়কারী মহিউদ্দিন সরদার, প্রকল্প সমন্বয়কারী শাকিল আহমেদসহ সংশ্লিষ্টরা এসময় উপস্থিত ছিলেন

পাঠকের মতামত

পুলিশ থেকে বাঁচতে জীবনটাই দিলেন সিএনজিচালক

গ্রামের চন্দনাইশে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এক সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে ...

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চলন্ত সিএনজিতে সিলিন্ডার বি’স্ফোরণ, চালক নিহত

চট্টগ্রাম – কক্সবাজার সড়কে চন্দনাইশ এলাকায় চলন্ত সিএনজি অটোরিকশার সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনে দগ্ধ হয়ে ...