প্রকাশিত: ০৬/০৩/২০১৭ ৯:১৪ এএম

কক্সবাজার প্রতিনিধি::
হেফাজতের আন্দোলন কোন ব্যক্তি, গোষ্টি বা সরকারের বিপক্ষে নয়। কাউকে ক্ষমতায় বসানো অথবা ক্ষমতাচ্ছুত করা হেফাজতের কাজ নয়। আমাদের আন্দোলন ইসলাম বিদ্বেষী শক্তির বিরুদ্ধে। যেখানে খোদাদ্রোহী শক্তির অবস্থান সেখানেই হেফাজতের প্রতিরোধ।

রবিবার (৫মার্চ) কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে শানে রেসালত সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনে থেকে মূর্তি সরাতে হবে। অন্যথায় তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলা হবে। বাবুনগরী আরো বলেন, মহানবী (স.) শিরকি-কুফরি, পৌত্তলিক মতবাদের বিরুদ্ধে আজীবন লড়াই করে মানুষকে যে তাওহীদ, রেসালত ও ঈমানের শিক্ষা দিয়েছেন। সেই শিক্ষা থেকে জাতিকে বিচ্যুত করার জন্য নাস্তিক্যবাদী ও পৌত্তলিকবাদী অপশক্তি বহুমূখি চক্রান্তে মেতে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, মূর্তি স্থাপনকারীরা আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। দেশকে আল্লাহর গজব থেকে বাঁচাবার জন্যে বিচারালয় প্রাঙ্গন থেকে এই মূর্তি সরানোর আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে কঠুক্তিকারীর জাবজ্জীবন দন্ড রয়েছে। কিন্তু নবী (স.) এর অবমাননাকারীর শস্তি মাত্র ২ বছর। এই আইন সরাসরি নবী (স.) এর শানে চরম অবমাননা।

তার মতে, প্রধানমন্ত্রী একজন মুসলমান। মুসলমান হিসেবে আইন করা দরকার। ইসলাম পরিপন্থি এ আইন সংশোধন করে ৯০ শতাংশ মুসলমানের এই দেশে বাস্তবভিত্তিক আইন প্রণয়ন করা হোক।

আলোচনা করেন ঢাকা জামেয়া কাসেমিয়া মিরপুরের পরিচালক মাওলানা জুনাইদ আল-হাবিব। তিনি বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ইসলামে নেই। দেশের কোন কওমী মাদরাসায় জঙ্গি তৈরী হয়না। এখানে সাচ্ছা ঈমানদার সৃষ্টি করা হয়। যারা কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তারা জ্ঞান পাপী ও ইসলামের শত্রু।

চট্টগ্রাম ওমরগণি এমইএস কলেজের অধ্যাপক ও ইসলামী সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান মাওলানা ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসেন বলেন, সংখ্যা গরিষ্ট মুসলমানের এই দেশে যারা কওমী মাদরাসা বিরুদ্ধে বিষোদগার করে, ইসলামী চিন্তা চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা ইহুদি সা¤্রজ্যবাদী অপশক্তির দালাল। মাহফিলে মুফতি মামুনুল হক এদেশ ও জাতিকে মূর্তি সংস্কৃতিমুক্ত করতে প্রয়োজনে আরেকটি শাপলা চত্ত্বর করা হবে ঘোষণা দেন।

দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক আল্লামা ওবাইদুর রহমান খান নদভী বলেন, কক্সবাজার ভূ-রাজনৈতিক কৈৗশলগত এলাকা। বিনিয়োগ ও পর্যটনের নামে এখানে বিশ্বশক্তি ক্ষেত্র হোক তা দেশবাসী চায়না। সার্বব্যেমত্ব ইসলামী সংস্কৃতি ও মূলবোধের মর্যাদা বজায় রেখে সব কিছু করতে হবে। দেশ ও জাতির স্বার্থ করে উন্নয়ন ও পর্যটন কোনটাই ঠিক হবেনা। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তার আসল চেহারা ধরে রাখতে ৯২ শতাংশ মুসলমাদের ধর্মীয় পরিচয়কে প্রধান্য দেওয়ার বিকল্প নেই।

দুই দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলন শনিবার বিকালে শুরু হয়। রবিবার সমাপনী দিনের বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতের জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাছান, প্রবীন আলেমে দ্বীন মাওলানা সোহাইব নোমানী, মাওলানা মাসরুর আহমদ। আলোচনা করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা জসিম উদ্দিন মিছবাহ, মাওলানা আবদুস সালাম কুদসী, মুফতি সাইফুল ইসলাম সাইফী, মাওলানা রমজান আলী। মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, সংখ্যা গরিষ্ট মুসলমানদের এ দেশে ঈমান আক্বীদা বিরোধী কোন ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবেনা। মহানবী (স.) এর শানে বেয়াদবীকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করতে হবে।

উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা হাফেজ ছালামত উল্লাহ, মাওলানা নুরুল আলম আল মামুন, মাওলানা মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন হাবীব, অর্থ সম্পাদক মাওলানা হাফেজ মুবিনুল হক, মাওলানা আবদুল মান্নান, মাওলানা আবছার উদ্দিন চৌধুরী, মাওলানা কেফায়ত উল্লাহ, মাওলানা হুসাইন আহমদ, মাওলানা হুমায়ুন কবির, মাওলানা সায়েম হোসেন চৌধুরী, মাওলানা মো. খালেদ সাইফি, মাওলানা এহতেশামুল হক, মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাওলানা জাহেদুর রহমান, কারী কলিমুল্লাহ, হাফিজ উদ্দিন, মাওলানা আনছার উল্লাহ প্রমুখ।

সম্মেলনে বরেণ্য উলামায়ে মাশায়েখ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন পরিচালনা করেন মাওলানা হাফেজ এরশাদ উল্লাহ, হাফেজ আবুল মঞ্জুুর, মাওলানা সোহাইল। বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির সুখ সমৃদ্ধি কামনার মধ্য দিয়ে দুই দিন ব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলন শেষ হয়।

পাঠকের মতামত

সন্তান কোলে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে, পরকীয়ায় স্ত্রী পালানোর ‘জবাব’ দিলেন স্বামী

দাম্পত্য জীবনে বিচ্ছেদ এলে অনেকেই ভেঙে পড়েন, অনেকে দীর্ঘ সময় বিষণ্নতায় কাটান। তবে মুন্সিগঞ্জের কামাল ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার বিষয়ক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শান্তি ও নিরাপত্তা জোরদার করণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিশেষ ...

নাফ নদের ৩৩ কি.মি. ও সেন্টমার্টিন পর্যন্ত ২০ কিমিতে বসেছে ৬ রাডারসীমান্ত ও সমুদ্রে নজরদারিতে রাডার ড্রোন থার্মাল ক্যামেরা

এবার দেশের সীমান্ত ও সমুদ্র সুরক্ষায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নজরদারি রাডার, ড্রোন ও থার্মাল ক্যামেরা যুক্ত ...

তদন্তের নির্দেশ চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজিকেটেকনাফে হত্যা মামলার এজাহার পাল্টে দিল পুলিশ

কক্সবাজারের টেকনাফে একটি হত্যা মামলার এজাহার পুলিশ কর্মকর্তারা পরিবর্তন করে দিয়েছেন- এমন অভিযোগে আদালতে মামলা ...