প্রিয় সহকর্মী, শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষের হৃদয়ভরা ভালবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে চিরবিদায় নিলেন রামুর কচ্ছপিয়ার ফাক্রিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জনপ্রিয় প্রধান শিক্ষক মো.ইসহাক (৪৮)। তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ভোর ৩ টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আগেরদিন হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় ফাক্রিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা নামাজ শেষে তাঁকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন মরহুমের শশুড় মাওলানা আবু আবদুল্লাহ মো. জহির উদ্দিন ওরফে বদরু।
মাওলানা মোতাহেরুল হকের সঞ্চালনায় জানাজা নামজের পূর্বে মাষ্টার মো.ইসহাক একজন সৎ, আদর্শবান, মিষ্টভাষী ও মেধাবী শিক্ষক উল্লেখ করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন রামু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম, স্থানীয় বিজ্ঞ আলেম মাওলানা ছালেহ আহমদ, কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জাগের আহমদ, কচ্ছপিয়া আইডিয়াল কে.জি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইদ্রিস সিকদার, রামুর ঘোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও জুমছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এনামুল হক। পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন শশুড় মাওলানা আবু আবদুল্লাহ মো. জহির উদ্দিন ওরফে বদরু।
জানাজা নামাজে গর্জনিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরী, কচ্ছপিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা মোক্তার আহমদ, গর্জনিয়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, কচ্ছপিয়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবু ঈসমাইল মোহাম্মদ নোমান, গর্জনিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ছুরুত আলম চৌধুরী, কচ্ছপিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন কোম্পানি, হাবিব আহমদসহ রামু ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নানা শ্রেণিপেশার লোকজন অংশ নেন।
জানা গেছে, মো. ইসহাক ফাক্রিকাটা এলাকার মরহুম আবুল কাশেমের দ্বিতীয় ছেলে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ছেলে ও ১মেয়ে রেখে গেছেন। মো. ইসহাক কচ্ছপিয়ার বড় জামছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাশেমের ছোট ভাই। তাঁর মৃত্যুতে এলাকা ও শিক্ষাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য-মো. ইসহাক ১৯৯৪ সালে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মৌলভিকাটা সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর তিনি কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ফাক্রিকাটা, শুকমনিয়া এবং গর্জনিয়া ইউনিয়নের পোয়াংগেরখিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০২ সনে পদোন্নতি পেয়ে ঈদগড় উত্তর বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। সেখান থেকে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের গর্জনিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০০৩-২০১৩ সন পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর শিক্ষকতা করার পর নিজ গ্রাম ফাক্রিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। সব মিলিয়ে তিনি ২৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। উনার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল শোক প্রকাশ করেছেন।