শ.ম.গফুর, উখিয়া::
টেকনাফে রোহিঙ্গা জঙ্গী সংগঠন আল ইয়াকিন ক্যাডাররা ডাকাতি ছাড়াও মুক্তিপণ আদায় করতে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করে চলছে। টেকনাফে এক ইয়াবা কারবারিকে অপহরণ করতে গিয়ে সমপ্রতি স্থানীয় জনতা ও পুলিশের জালে আটকে গেছে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত ও আব্দুল হাকিমের সহযোগী রোহিঙ্গা জঙ্গী সংগঠন আল ইয়াকিনের তিন ক্যাডার। এই সময় পুলিশ উদ্ধার করেছে ইয়াবা বিক্রেতা কুমিল্লা মুরাদনগর নয়াকান্দির আকবর হোসেনের পুত্র আবদুল মান্নানকে। তবে আল ইয়াকিনের অর্থ ও অস্ত্র যোগানদাতা মৌলবি শফিকুর রহমানকে এ পর্যন্তও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মংগলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উখিয়া থানা পুলিশের সেকেন্ড অফিসার মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় আটক করেছে “আল ইয়াকিনের সেকেন্ড ইন কমান্ড খ্যাত নুরুল ইসলামকে। কুতুপালং বস্তির ইসহাক এর ছেলে। তার বিরুদ্ধে বহুমুখী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে।
ইতিপূর্বে আটক টেকনাফ পৌরসভা পুরান পল্লান পাড়ার লাল মিয়ার পুত্র জাহেদ আলম, মধ্যম জালিয়া পাড়ার আবু হানিফের পুত্র ও সম্প্রতি র্যাবের হাতে আটক ডাকাত ফরিদুল আলমের ভাগিনা জালাল উদ্দিন এবং একই এলাকার আবুল বশরের পুত্র মো: আবছার কে টেকনাফ থানা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। কিছুদিন আগে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ভয়ঙ্কর জঙ্গী মৌলবি শফিককে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশে দিয়েছিল। রাতারাতি রোহিঙ্গা জঙ্গীদের অঢেল টাকা খরচ ও অসৎ পুলিশের দুর্বল রিপোর্টের কারনে ওইসময় বেশীদিন কারাভোগ করতে হয়নি তাকে। জামিনে বেরিয়ে এসে ফের পলাতক হয়ে জঙ্গীপনায় জড়িয়ে পড়ে মৌলবি শফিক। সম্প্রতি শহরের খুরুশকুল রাস্তার মাথা থেকে বোমা তৈরীর বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামসহ র্যাবের হাতে আটক আল ইয়াকিনের দুই ক্যাডার মৌলবি করিমূল্লাহ ও রমিজ ওসব অবৈধ সরঞ্জাম তাদের নেতা মৌলবি শফিকের কাছে নিয়ে যাচ্ছিল বলে জানালেও রোহিঙ্গা জঙ্গী মৌলবি শফিক এখনও অধরা রয়ে গেছে। সে এখন কক্সবাজার শহরে লোকচক্ষুর আড়াঁলে থেকে ঠিকই জংগী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সুত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মিয়ানমারের উগ্র বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আল ইয়াকিনের ভয়ঙ্কর রোহিঙ্গা জঙ্গী মৌলবি শফিক গত ২ সপ্তাহ ধরে গোপনে কক্সবাজারে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। প্রসবের সময় তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান মারা যাওয়ায় তাকে নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার কক্সবাজারে আসে। যদিও তাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা হন্যে হয়ে খুঁজছে। দুর্ধান্ত প্রকৃতির এ জঙ্গী অপর রোহিঙ্গাদের কাছে বলে বেড়াচ্ছে-প্রশাসনের দুই কর্মকর্তাকে মোটা অঙ্কের বখশিস দিয়ে দুই সপ্তাহের জন্য কক্সবাজারে অবস্থান করছে। তবে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া না গেলেও স্থানীয়রা মৌলবি শফিককে কয়েকদিন ধরে শহরের রোমালিয়াছড়া চৌধুরীপাড়ার বাসায় যাওয়া-আসা করতে দেখেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সে মাঝে মধ্যে উখিয়া -টেকনাফ রোহিঙ্গা বস্তি ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় আসা -যাওয়া করে বালুখালীর কথিত এক মৌলবী, টেকনাফের লেদায় প্রভাবশালী এক স্থানীয় ব্যক্তি, বাহারছড়ার এক মৌলবী ও উখিয়ার কুতুপালংয়ের প্রভাবশালী এক ব্যক্তির সাথে রুদ্ধদার বৈঠক করেছে বলে জানা যায়। আসন্ন কোরবানীর ঈদকে টার্গেট করে জংগী রোহিঙ্গাদের সংঘটিত করার জন্য “গরু উৎসর্গ ” করবে এমন তথ্য মিলেছে। উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাজাপালং ইউপির সদস্য মৌলানা বখতেয়ার আহমদ বলেন, রোহিঙ্গা বস্তি গুলো অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রাও এখন হুমকির মুখে পড়েছে দুস্কৃতকারী রোহিঙ্গাদের কারণে। এ বিষয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল খায়ের জানান, আটক নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে সু নিদিষ্ট অভিযোগ আছে।সাধারণ রোহিঙ্গারা অতিষ্ঠ হয়ে তাকে ধরিয়ে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।