নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯/০৮/২০২৪ ১:১০ পিএম , আপডেট: ১৯/০৮/২০২৪ ১:২৪ পিএম

মহেশখালীতে বিএনপি নেতা শফিউল আলম শফিকে হত্যার অভিযোগে বিএনপি থেকে দু’বারের সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে৷ ১৭ আগস্ট রাতে মহেশখালী থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, নিহত শফিউল আলম শফির বাবা কামাল পাশা বাদি হয়ে মামলাটি করেন। মহেশখালী থানায় নিয়মিত মামলার ৬ নম্বর ক্রমিকে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে বিএনপি থেকে দুইবারের এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে মহেশখালী উপজেলা যুবদল নেতা জাহেদুল হক নাহিদকে। মামলায় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৭-৮ জনকে।

ওসি জানান- মামলায় সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের বিরুদ্ধে ঘটনায় হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলার বিবরণে বলা হয়- গত ৫ জুন মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা সদর থেকে বড় মহেশখালীর দিকে আসার সময় বানিয়ার দোকান এলাকায় শফিউল আলম শফিকে গতিরোধ করে উপর্যোপরি পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সূত্র জানায়- গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিজয় মিছিল শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে শফিউল আলম শফি (৩৫) এর উপর হামলা হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। ওখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩ টায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ওইদিন উপজেলা বিএনপি তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক সংবাদ সম্মেলন করে ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল শেষে রাত আনুমানিক ১২টার সময় তার নিজ বাড়িতে পথে সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ ও যুবদল নেতা নাহিদের নির্দেশে তাকে মারধর করা হয় বলে দাবি করেন। একই সাথে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। তিনি হামলাকারীরা বিএনপির বৈধ কমিটির কেউ নয়, তারা স্বঘোষিত বলেও দাবি করেন। এ সময় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গতঃ মহেশখালীতে বিএনপির রাজনীতিতে দুইটি প্রতিদ্বন্দ্বি শক্ত গ্রুপ রয়েছে। অনুমোদিত ভাবে কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে বলে দাবি আবু বক্কর গ্রুপ এর। অপরদিকে আরও একটি আলাদা কমিটির মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আলমগীর ফরিদ সমর্থিত গ্রুপটি। বিগত সময়ে দুইটি কমিটির মাধ্যমে আলাদা দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হতে দেখা যায়। উপজেলায় বিএনপির গ্রুপ ভিত্তিক রাজনীতির এই রেষারেষিতে শাফি আলম শফির উপর হামলা ও পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় বিএনপির সাধারণ কর্মীরা জানান।
উল্লেখ্য- নিহত শফিউল আলম শফি উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের কুলাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ওই এলাকার কামাল পাশার সন্তান। শফি -আবু বক্কর গ্রুপ এর উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন, একই সাথে তিনি উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন বলেও জানা যায়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন।

সর্বশেষ মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, মামলার দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন হয়ে আদালতে উপস্থাপনের পর তারা পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম শুরু করবেন। মামলাটি তদন্ত করছেন মহেশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী

পাঠকের মতামত

ক্যাম্পে বন্ধ শিক্ষা কার্যক্রম, ঝুঁকিতে লাখো শিশু

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে সব শিক্ষা কার্যক্রম। ইউনিসেফ ...