ডেস্ক রিপোর্ট::[caption id="attachment_49922" align="alignleft" width="720"] শিক্ষার্থীদের কান্নায় আটকে গেল শিক্ষকের বদলি[/caption]
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের তিরুভাল্লুর জেলার একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করেন ২৮ বছর বয়সী জি ভগবান। সম্প্রতি তার বদলির আদেশ আসে। কিন্তু প্রাণপ্রিয় শিক্ষককে কিছুতেই ছাড়তে চাইছে না ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা। তারা ওই শিক্ষককে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করে। আবেগ সংবরণ করতে পারেননি ওই শিক্ষকও। শিক্ষার্থীদের জড়িয়ে ধরে নিজেও কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ দৃশ্যটি তামিলনাড়ুর খবরের চ্যানেল পুথিয়া থালাইমুরাতে প্রচারিত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ বদলির আদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করে। খবর: এনডিটিভি।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এ আবেগঘন দৃশ্য ভারতের সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়েছে। শুধু শিক্ষার্থীদের কাছেই না, অভিভাবকদের কাছেও সমান জনপ্রিয় শিক্ষক জি ভগবান। শিক্ষার্থী-অভিভাবক সবাই বলছেন, ক্লাসের ভেতরে-বাইরে শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে জি ভগবানের সীমাহীন অবদান রয়েছে।
একজন শিক্ষার্থী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘তিনি আমাদেরকে সব বিষয়ে সাহায্য করেন। আমরা কিছুতেই তার বদলি চাই না। তিনি আমাদের কাছে বড় ভাইয়ের মতো।’
জি ভগবান এই স্কুলটি দিয়েই তার শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। ২০১৪ সালে স্কুলটিতে যোগ দেন তিনি। কিন্তু স্কুলটিতে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা বেশি হওয়াতে তাকে অন্য স্কুলে বদলি করার আদেশ আসে।
শিক্ষার্থীদের এমন ভালোবাসা সম্পর্কে ভগবান বলেন, ‘আমি পড়াশোনার বাইরেও ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার চেষ্টা করেছি। আমি ওদের গল্প বলতাম, ওদের পারিবারিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করতাম, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ওদের সঙ্গে আলোচনা করতাম, প্রোজেক্টরে বিভিন্ন জিনিস দেখাতাম... এইভাবেই আমি ওদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। ওদের কাছে আমি একজন শিক্ষকের চেয়েও বেশি, একজন বন্ধু ও বড় ভাই।’
শিক্ষার্থীদের এমন আবেগ দেখে ভগবানের বদলির আদেশ স্থগিত করতে শিক্ষা অধিদপ্তরকে অনুরোধ করেন স্কুলের অধ্যক্ষ এ অরবিন্দ। আবেদনে সাড়া দিয়ে কর্তৃপক্ষ সাময়িকভাবে ভগবানের বদলির আদেশ স্থগিত করে।
স্কুলটির অধ্যক্ষ এ অরবিন্দ বলেন, ‘আমরা শিক্ষা দপ্তরের কাছে অনুরোধ করেছি তাকে যেন বদলি না করা হয়। আমাদের বিদ্যালয়ের অন্যতম সেরা শিক্ষক ভগবান। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের উন্নতির জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেন এবং বিভিন্ন স্পেশাল ক্লাসের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনায় আগ্রহী করে তোলেন। এমনকি তিনি ছাত্রদের জন্য খাবারের ব্যবস্থাও করেন।