এম.বশিরুল আলম,লামাঃ
পার্বত্য জনপদ বান্দরবান লামা উপজেলায় নারী শিশু উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। নারী শিশু উন্নয়নে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রণীত জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। লামা উপজেলায় কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় লামায় বহুনারীকে ভাতা প্রদানের আওতায় এনে সরকারের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নারী শিশুর উন্ননে দৃশ্যমান বাস্তবতার আরেকটি স্বাক্ষর রাখলেন। ২৭ আগষ্ট কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় লামায় তিন শ’ জন দরিদ্র মা’কে আনুষ্ঠানিকভাবে ভাতা প্রদান করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এম.পি।
এ ব্যপারে লামা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুস্মিতা খীসা জানান, জাতীর জনক কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার ২০২১ সালের রূপকল্প বাস্তায়নের লক্ষ্যে নারী ও শিশুদের উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর আওতায় লামা পৌরসভায় কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা পাচ্ছে তিনশো জন মা। লামা উপজেলায় একইভাবে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবে ৫ শ’্ মা। ২৭ আগষ্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর উপস্থিতিতে লামা পৌরসভায় তিনশোজন মা’কে আনুষ্ঠানিকভাবে এসব ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিলের ভাতা প্রদান করা হয়। বরাদ্দের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে সুস্মিতা খীসা জানান। তিনি জানায়, বাংলাদেশের মোট জনসংখ̈ার এক বৃহৎ অংশ নারী ও শিশু। নারী ও শিশুর সার্বিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, ক্ষমতায়ন এবং সামগ্রিক উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করনের জন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচী পরিচালনা করে চলেছেন। নিবিড় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীর দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান, শ্রম বাজারে ব্য̈াপক অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের মধ্যদিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সে সাথে গ্রামীণ অসহায় মহিলাদের উন্নয়ন ও পুনর্বাসন, হতদরিদ্র, দুস্থ অসহায় ও গর্ভবতী নারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের মাঝে অন্তর্ভূক্তি করনের লক্ষেও বিভিন্ন কর্মসূচী পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে উল্লখযোগ্য হচ্ছে দরিদ্র মা’র মাতৃত্বকাল ভাতা, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল, প্রশিক্ষণ ও দারিদ্র বিমোচনে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্প ও একাধিক কর্মসূচীর মাধ্যম মহিলা ও শিশুদের বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন অব্যাহত আছে। উল্লেখযোগ্য ̈ উন্নয়ন কার্যক্রমসমূহ হচ্ছে : জাতীয় শিশু নীতি ২০১১ বাস্তবায়ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ বেতনে ০৪ মাস থেকে ০৬ মাসে বর্ধিত করা হয়েছে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে ৫০ এ উন্নীত করা হয়েছে। নারীর প্রতি পারিবারিক পর্যায়ে সংঘটিত সহিংসতা প্রতিরোধে এবং নারীকে সুরক্ষার আওতায় আনার জন্য পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০” প্রণয়ন করা হয়েছে। ইভটিজিং বা যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের অধীনে দন্ডবিধির ধারা অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেটকে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। দেশের সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটিতে তিনজন করে নারী সদস্য নির্বাচনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুস্মিতা খীসা বলেন, সরকার ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত করার লক্ষ্যে দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারীর উন্নয়নে ব্যপক কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে নারী ও শিশু বান্ধব এসব কর্মসূচী গুরুত্বপুর্ন অবদান রাখবে।