সরওয়ার আলম শাহীন, উখিয়া নিউজ ডটকম::
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ববরর্তা থেকে প্রাণ বাঁচতে উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এখনও অব্যাহত রয়েছে।মানবতার দোহাই দিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রতিদিন রোহিঙ্গা বস্তি এলাকায় অপরিচিত লোকজন ত্রাণ বিতরণের নামে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।প্রতিদিন রাতের আধাঁরে ও ভোররাতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে টিম এসে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত ও নগদ টাকা বিতরণ করে যাচ্ছে বাধাঁহীনভাবে।এ কাজে সরকারের তথা জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন থেকে কোন ধরনের অনুমতি নেয়া হচ্ছেনা বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে।মানবিক দৃষ্টিকোন ছাড়াও রোহিঙ্গাদের অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের লক্ষ্যে একাধিক জঙ্গি সংগঠন রোহিঙ্গাদের মাঝে নগদ টাকা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে বলে সুত্রটি নিশ্চিত করেছে।লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের নিয়ে গড়া অরক্ষিত রোহিঙ্গা বস্তিতে যে কেউ সহজে প্রবেশ করতে পারছে।এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গা জঙ্গীরা কক্সবাজার জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সুত্র জানায়,বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিজিবির কড়া সতর্কতা সত্ত্বেও স্থানীয় দালালদের সহায়তায় নাফ নদী পেরিয়ে কৌশলে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ঢুকে পড়েছে ভাসমান ও সহায় সম্বলহীন রোহিঙ্গা পরিবারগুলো।এসে তারা অবন্থান নিচ্ছে উখিয়া ও টেকনাফের নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প-বস্তিসহ আশপাশের এলাকা ও কক্সবাজার জেলার বিভিন্নস্থানে।মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উৎসাহ ও ঢালাওভবে এদেশে নিয়ে আসতে শুরু থেকেই দালালদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।ব্যাপকভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটাতে এসব দালালদের সীমান্ত পয়েন্টগুলোর বিভিন্ন স্থানে নিয়োজিত রেখেছে জঙ্গি সংগঠন আরএসও সহ কয়েকটি সংস্থা।তাদের লক্ষ্য বিদেশ থেকে বিপুল পরিমান অর্থ এনে আত্মসাত এবং নতুন আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে দল ভারি করা।এমনটাই জানা গেছে,স্থানীয় কুতুপালং বস্তি এলাকায় বসবাস করা বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ করে।ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গি সংগঠনগুলো কতিপয় এনজিওর সাথে আঁতাত ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এ কাজে ব্যবহার করছে বিভিন্ন লেভেলে।স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে কুতুপালং ও টেকনাফের লেদা অরক্ষিত রোহিঙ্গা বস্তিতে নগদ টাকা বিতরণ করে যাচ্ছে বিভিন্ন টিমে ভাগ হয়ে অপরিচিত লোকজন।তারা ১ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত এক একটি রোহিঙ্গা পরিবারকে প্রদান করেছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাকা প্রদানকারী ব্যক্তিরা জানান,তারা কারও নির্দেশে বা কোন সংস্থার পক্ষ থেকে এ টাকা বিতরণ করছেন না।তবে ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গ থেকে সাহায্য হিসেবে নিয়ে তা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিলিয়ে দিচ্ছেন।সরকারি ভাবে এসব রোহিঙ্গাদের সাহায্য সহযোগীতা করা না হলেও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা,ব্যক্তি ও জঙ্গি সংগঠনের উদ্যোগে অত্যান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ চলছে বাধাহীন ভাবে।এনজিও সংস্থা আইওএম’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সৈকত বিশ্বাস স্বীকার করে বলেন,তারা এ পর্যন্ত ১ হাজার অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের খাদ্য তৈরির সরঞ্জামাদি সরবরাহ করেছে।সুজনের সভাপতি নুর মুহাম্মদ সিকদার জানান,প্রায় দেড় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার ভারে ন্যূয়ে পড়া জনপদ উখিয়ার সাধারণ মানুষ তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।এভাবে ঢালাও ভাবে ত্রান সামগ্রী বিতরন করা হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব নয়।বস্তিসহ অনুপ্রবেশকৃত রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রন জরুরী বলে তিনি মনে করেন।আর তা হলে অভাবের তাড়নায় এসব রোহিঙ্গারা অপরামুলক কর্মকান্ডে জড়াবে এটাই স্বাভাবিক।উখিয়া রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে বিজিবি,পুলিশ,কোস্টগার্ডসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকার পরও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অব্যাহত রয়েছে।এমতাবস্থায় এসব রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সহযোগীতা করা হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হয়।এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিনের যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,অনুপ্রবেশকৃত রোহিঙ্গা ও বস্তির রোহিঙ্গাদের উপর কড়া নজরদারী রাখা হয়েছে,রোহিঙ্গাদের মাঝে প্রসাশনের অনুমতি ছাড়া ত্রান সামগ্রী বিতরন বন্ধ করতে প্রয়োনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।