
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে টেকনাফের কেরুণতলী (নয়াপাড়া) প্রত্যাবাসন সেন্টার (ঘাট) পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। শনিবার দুপুরে চীনা রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কেরুণতলী প্রত্যাবাসন ঘাটের কক্ষগুলো ঘুরে দেখেন। এই সময় অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার খালিদ হোসেনসহ সরকারের কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানে রাজি হয়নি অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সম্ভাব্য প্রত্যাবাসনকে সামনে রেখে চীনা রাষ্ট্রদূতসহ একটি দল কেরুণতলী প্রত্যাবাসন ঘাটে আসেন। পরে তিনি ঘাটের কক্ষগুলো ঘুরে দেখেন। কিন্তু কারও সঙ্গে কথা বলেননি।
এদিকে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করতে চলতি মাসে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। তবে সাইক্লোন ‘মোকা’র কারণে এ সফর পিছিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার। যদিও এর আগে ৫ মে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি ও রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা রাখাইন সফর করেছিলেন। নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে রোহিঙ্গাদের মনোবল বাড়ানোর জন্য এ মাসেই মিয়ানমার তাদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথা বলেছিল।
প্রসঙ্গত, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা বিতাড়নের তিন মাসের মাথায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে প্রত্যাবাসন বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি সই করেছিল। এ চুক্তির নেপথ্যে ছিল চীন। কিন্তু গত প্রায় ছয় বছরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বেঁধে দেওয়া সময়ে এক দফা প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে চীনের মধ্যস্থতায় ২০১৯ সালে আবার প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। এ ঘটনার পর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসংক্রান্ত আলোচনা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে।
পাঠকের মতামত