প্রকাশিত: ১০/১০/২০১৯ ৪:০৯ পিএম

সেনাবাহিনীপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিশু নিপীড়নের ঘটনায় সেনাসদস্যের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিললে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে শুধু চাকরিচ্যুত নয়; তাকে সিভিল জেলেও পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বগুড়া সেনানিবাসে আর্মার্ড কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে ষষ্ঠ সাঁজোয়া কোরের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার পর গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আইএসপিআর থেকে ব্রিফিং দেয়া হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের নেতৃত্বে তদন্ত আদালত গঠন করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে কোনো সেনাসদস্যের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিললে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে শুধু চাকরিচ্যুৎ নয়; তাকে সিভিল জেলেও পাঠানো হবে। সেনাপ্রধান বলেন, তাদের সব কার্যক্রম অতি স্বচ্ছতার সঙ্গে করা হয়; কোনো কিছু লুকানোর নেই।

সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ
সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ
তিনি বলেন, প্রায় ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতা প্রশংসিত হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সেনাবাহিনীও কাজ করছে। শিশু ধর্ষণের ঘটনাস্থলে শুধু সেনাবাহিনী নয়, অন্যান্য বাহিনীর টহলও ছিল। ক্যাম্পগুলো থেকে রোহিঙ্গারা বের হয়ে যাচ্ছে, বিভিন্ন স্থানে ধরাও পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টাও করছে। তাই অপরাধ ঠেকাতে, রোহিঙ্গাদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ ও তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে সাতটি ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর ওপর হামলাসহ বিভিন্ন বিশৃঙ্থলা প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, শান্তিচুক্তির আওতায় সেখানে সেনাসদস্য কমিয়ে ও অনেক ইউনিট গুটিয়ে নেয়া হয়েছে। শান্তিচুক্তিতে শর্ত ছিল- শান্তি বাহিনী ও অন্যরা কোনো অস্ত্র রাখবে না। কিন্তু তারা সে শর্ত ভঙ্গ করে যাচ্ছে।

ইউপিডিএফের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হচ্ছে। জড়িতদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে। চাঁদাবাজিসহ অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেদের মধ্যে অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা শান্তিচুক্তির শর্ত পালন করছে না। তাই আমরা অতীতের চেয়ে কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছি। সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হচ্ছে; এর পর সব নিয়ন্ত্রণ হবে। এর আগে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সাঁজোয়া কোরের পুনর্মিলনী প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। বগুড়া সেনানিবাসের আর্মার্ড কোর সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে এই পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সামরিক-অসামরিক কর্মকর্তা ছাড়াও আর্মার্ড কোরের অবসরপ্রাপ্ত ও চাকরিরত কর্মকর্তারা অংশ নেন।

প্যারেড পরিদর্শন শেষে সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ তার বক্তব্যের শুরুতে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীনতার রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া কোরের সদস্যরা ‘প্রাণ দেব মান নয়’ মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত। এ কোরের সদস্যরা দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো দুর্যোগময় মুহূর্তে ও জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকার সাঁজোয়া কোরের আধুনিকায়নে অত্যাধুনিক যুদ্ধযান ট্যাংক এমবিটি-২০০০ ও রিকোভারি যান সংযোজন করেছে। এ ছাড়া ১৬ ক্যাভ্যালরি ও ২৬ হর্স নামে আরও দুটি রেজিমেন্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশ ও দেশের বাহিরের যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় সেনাবাহিনীকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে। তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতায় অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আরও যুগোপযোগী ও আধুনিক হয়ে গড়ে উঠবে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের তিন সদস্য কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে ভেতরে ঢুকে এক শিশুকে নিপীড়ন করেছে বলে অভিযোগ ওঠে।

সুত্র: পিবিএ

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব জামায়াতের

আরাকানের রোহিঙ্গা সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে জামায়াতে ইসলামী। রোববার রাজধানীর একটি ...

মেজর সিনহা হ’ত্যায় প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল ও ৭ দিনের মধ্যে কার্যকরের দাবি

মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ...

আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভিডিওতে যেভাবে এসেছে তা সঠিক নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভিডিওতে যেভাবে দেখানো হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ...

কর্তৃপক্ষের একেক দিন একেক মন্তব্যে দুর্বল ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না!

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে নজিরবিহীন লুটপাটে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয় বেশ কয়েকটি ব্যাংকে। যা তখনকার ...