উখিয়া নিউজ ডটকম::
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ঘরবাড়ি,স্বজন ও দেশহারা রোহিঙ্গারা বিশ্বে সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। মিয়ানমার সেনাদের দমন-নির্যাতন, হত্যা-ধর্ষণ প্রভৃতি বর্বরোচিত নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তারা যেভাবে জীবন-যাপন করছে তা অত্যন্ত করুণ। তবে বাংলাদেশ সরকার তাদেরকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সোমবার বেলা ৩ টার দিকে কুতুপালং ডি-৫ ব্লকে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।এ সময় গুতেরেস বলেন, প্রকৃতপক্ষে রোহিঙ্গা মুসলিমরা মিয়ানমারের নাগরিক, তাই এখানে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দিয়ে মিয়ানমারে ফেরত নিতে হবে। কারণ রোহিঙ্গারা স্বদেশে নিরাপদে ফিরতে চায়।
এ সময় বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে এখানে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা নিঃস্ব। তাদেরকে বিশ্বব্যাংক অনেক আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে ততদিন পর্যন্ত সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পাশে থেকে রোহিঙ্গারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে তার জন্য কাজ করছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা দিকে জাতিসংঘের মহাসচিব, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, আর্ন্তজাতিক রেডক্রসের প্রেসিডেন্ট পিটার মোরার, জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) প্রধান পিলিপো গ্রান্ডি ঘুমধুমের টিভি রিলে কেন্দ্র এলাকায় রেডক্রিসেন্ট পরিচালিত এক্সটেনশন ৪ নিবন্ধিত সি ব্লকে পৌঁছান। সেখানে ২০ জন নির্যাতিত রোহিঙ্গা নারী ও ২০ জন নির্যাতিত পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের কাছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরেন।
পরে প্রতিনিধিদল ট্রানজিট ক্যাম্প ৪, কুতুপালং ক্যাম্প ১ এর আইওএম পরিচালিত নারীবান্ধব কেন্দ্র ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে সেবার মান রক্ষা ও যথাযথ দায়িত্ব পালনের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
এ সময় তাদের সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মোহাম্মদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম, পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল, উখিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মার্মা, উখিয়ার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) একরামূল ছিদ্দিক। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেল ৪ টার দিকে তারা কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।