উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৬/০৫/২০২৪ ৯:৩০ এএম

সুজাউদ্দিন রুবেল::
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়সহ নানা দুর্যোগের আগাম বার্তা সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা কক্সবাজার ‘রাডার স্টেশন’। কিন্তু গেলো ১০ মাস ধরে মেয়াদত্তীর্ণ হয়ে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে রাডার স্টেশনটি। যার কারণে বঙ্গোপসাগরের ৪’শ কিলোমিটার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়সহ নানা দুর্যোগের আগাম বার্তা নির্ণয় করা যাচ্ছে না। আর দ্রুত সময়ের মধ্যে রাডার স্টেশন পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা।

বৈরী আবহাওয়া; সাগর উত্তাল। জোয়ারের পানি স্বাভাবিক চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম বার্তা সংগ্রহ করে রাডার স্টেশন।
কক্সবাজার রাডার স্টেশন; যা হিলটপ সার্কিট হাউজের পাশে অবস্থিত। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়সহ নানা দুর্যোগের আগাম বার্তা সংগ্রহ করে কক্সবাজার রাডার স্টেশন। যা চতুর্দিকে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত নিখুঁতভাবে আগাম সতর্কতা বার্তা প্রদানে সক্ষম ডপলার রাডারটি। এ রাডারের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য ভি সেটের মাধ্যমে সাথে সাথে আবহাওয়া দপ্তর জানতে পারে।
কিন্তু গেলো ১০ মাস ধরে কক্সবাজার রাডার স্টেশনটি মেয়াদর্ত্তীণ হয়ে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এখন রাডার স্টেশনটি পাহারা দিচ্ছে পুলিশের কয়েকজন সদস্য।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কক্সবাজার রাডার স্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা পুলিশ সদস্য বলেন, এটা হলো রাডার স্টেশন। এখানে কেউ থাকে না বা কারো অফিস নেই। যদি কারো সাথে কথা বলার প্রয়োজন পড়ে তাহলে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসে যেতে হবে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কক্সবাজার রাডারটি মেয়াদকাল ১০ থেকে ১২ বছর। কিন্তু কক্সবাজার রাডারটি ব্যবহৃত হয় ১৭ বছর। ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট রাডার স্টেশনটি মেয়াদর্ত্তীণ হয়। এরপর থেকে রাডারটি কাজ করছে না।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান বলেন, অকেজো বলতে এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। রাডারের মেয়াদ হচ্ছে ১০ থেকে ১২ বছর। এখন ১৭ বছর চলছে। এটা তো এমন নয় যে পার্টস কিনতে পাওয়া যাবে। বাংলাদেশে তো এগুলো নাই। রাডারের মেয়াদকাল থাকে ১০ বছর। এটার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে আবহাওয়াগত তথ্য, যেমন মেঘ বৃষ্টি এসব ক্যাপচার করা রাডারের কাজ। রাডার থাকলে মেঘ বৃষ্টি কিংবা বাতাসের গতিবেগ নির্ণয় করা যায়।

কক্সবাজার একটি উপকূলীয় অঞ্চল। প্রতিবছরই এখানে ঘূর্ণিঝড়সহ কয়েকটি দুর্যোগ মোকাবিলা করে থাকে উপকূলবাসি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে রাডার স্টেশন পুনরায় চালু করার দাবি পর্যটকসহ স্থানীয়দের।
সোনা মিয়া বলেন, আমরা অনেক দূর-দূরান্ত থেকে এখানে কক্সবাজার আসি। অনেক টাকা পয়সা খরচ করে, অনেক সময় নষ্ট করে এখানে আসি। এখানের রাডারটা মূলত অকেজো হয়ে পড়েছে। শোনা যাচ্ছে সংকেত চলছে, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এখন আমরা কি পানিতে নামব নাকি ডাঙায় থাকব এটা আমরা বুঝতেই পারছি না। রাডারটি যদি ভালো হতো, আমরা যদি প্রতিনিয়ত আবহাওয়ার সঠিক তথ্য পেতাম।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার ফিল্ড টিম ম্যানেজার মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, কক্সবাজার রাডার স্টেশনটি মেয়াদত্তীর্ণ হবার কারণে ঠিক মতো কাজ করছে না। যার কারণে আমরা সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে। কক্সবাজার একটি ঘূর্ণিপ্রবণ এলাকা, সমুদ্রের আবহাওয়া প্রায় সময় পরিবর্তন হয়। তাই সঠিক সময়ে সঠিক তথ্যটি পায় তাহলে সঠিক সময়ে প্রস্তুতি নেয়া যাবে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ১৯৬৯ সালে সুইডিশ শিশুকল্যাণ সংস্থা ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সহযোগিতায় কক্সবাজার রাডার স্টেশনটি স্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৭ সালের ২২ এপ্রিল জাপান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় রাডার সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়। যে রাডার স্টেশনটি কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউসের পাশে অবস্থিত। সমতল ভূমি থেকে ৬০ ফুট উচুঁ পাহাড়ের চূড়ায় প্রায় ৯৯ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ভবনের ওপর রাডারটি স্থাপন করা হয়।

পাঠকের মতামত

টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ দুদকের মামলা

টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ স্পেশাল ...

রাজাপালং ইউপি’র উপ নির্বাচনে প্রতীক পেলেন চার চেয়ারম্যান প্রার্থী

উখিয়ার রাজাপালং ইউপির উপ নির্বাচনে অংশ নেওয়া চার চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী প্রতীক পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ...

আইনি লড়াইয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী

উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের উপনির্বাচনে মহামান্য হাইকোর্টের রাযে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিস কর্তৃক বাতিলকৃত মনোনয়ন ...