নুরুল আমিন হেলালী::
জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় ও বিপনন প্রতিনিধিদের মোটর সাইকেলই যেন স্থানীয় ও চট্রগ্রাম কিংবা ঢাকা থেকে আগত মৌসুমী ডাক্তারদের লোকাল পরিবহন। এভাবে এম আরদের পেছনে কিছু পরিচিত ডাক্তারদের নিয়মিত যাত্রী হওয়ার ঘটনায় জনমনে সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রশ্নের। এ নিয়ে স্বয়ং অধিকাংশ এম আরও তিক্তবিরক্ত বলে এ প্রতিনিধির কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। অনেকের অভিযোগ রাত নেই বিরাত নেই ডাক্তার সাহেবরা ফোন দিলেই তাদের ব্যবহৃত মোটর সাইকেল নিয়ে বান্দাকে হাজির থাকতে হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক মৌসুমী ডাক্তারকে বিমান বন্দর থেকে চেম্বার আবার চেম্বার থেকে বিমান বন্দর অন্যদিকে স্থানীয় অনেককে বাসা থেকে চেম্বার কিংবা চেম্বার থেকে বাসায় যথাসময়ে পৌঁছে দেয়ায় যেন তাদের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শহর কিংবা গ্রাম এলাকায় নামী-বেনামী অর্ধ শতাধিক ঔষধ কোম্পানীর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধি কর্মরত রয়েছেন। বলতে গেলে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্টিত ওষুধ উৎপাদন কারী কোম্পানী ছাড়া অধিকাংশ ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা ডাক্তারদের কাছে জিম্মি। ফলে কোম্পানী প্রদত্ত সকল ধরনের উপঢৌকন ছাড়াও ডাক্তারদের বাসায় বাজার পোঁছানো সন্তানদের সময়মত বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেয়া এবং পূন:রায় বাসায় নিয়ে আসার দ্বায়িত্ব যেন এখন এম আরদের হাতে। ক্রিয়াশীল ওষুধ কোম্পানীর মধ্যে রয়েছে স্কয়ার, ইবনে সিনা, বেক্সিমকো ফার্মা, বায়োফার্মা, এক্মি ফার্মা, ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল, জেনারেল ফার্মা, অপসোনিন্, ইনসেপ্টা, এসিআই, এরিষ্টোফার্মা, এপেক্স ফার্মা, এসকেএফ, গ্লোাব ফার্মা, ইউনিমেড্ এন্ড ইউনিহেলথ্, ইউনাইটেড ফার্মা, নাভানা ফার্মা, স্ট্যান্ডার্ড ল্যাবরেটরিজ, আরএকে ফার্মা, জেসন ফার্মা, নোভেল্টা বেষ্টওয়ে, অর্গানিক ফার্মা, নভো ফার্মা, হেলথ্ কেয়ার, এল্কো ফার্মা, পপুলার ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মাসহ আরও অনেক। এসব কোম্পানীতে যারা কর্মরত তাদের মধ্যে রয়েছেন টেরিটরি ম্যানেজার, সিনিয়র মেডিকেল প্রমোশন অফিসার, মেডিকেল প্রমোশন এক্সিকিউটিভ ও মেডিকেল প্রমোশন অফিসার। জেলার বিভিন্ন এলাকায় মেডিকেল সেবায় নিয়োজিত সরকারী- বেসরকারী প্রায় সহ¯্রাধীক ডাক্তার রয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, কোন কোন ডাক্তার ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মোটর সাইকেলে চড়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করছেন। সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর প্রোডাক্ট বা পণ্য লিখতে উৎসাহিত করতে রিপ্রেজেন্টেটিভরা অনায়াসে এবং স্বাচ্ছন্দে ডাক্তার পরিবহনের কাজ করে চলেছেন। বিষয়টি দৃষ্টিকটু হওয়ায় স্বয়ং এম আর, সচেতনমহল ও ঔষধ ব্যবসায়ী সহ অনেকে এ প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তবে অনেকের দাবী, সব ডাক্তার ও মেডিকেল কোম্পানীর প্রতিনিধি এ কাজে জড়িত নন। এটা ডাক্তার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের মধ্যকার সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। জানা যায়, কর্মরত মেডিকেল প্রতিনিধিদের দৈনন্দিন কার্যে মধ্যে রয়েছে ডাক্তার ও কেমিষ্ট ভিজিট। ডাক্তারদের প্রোডাক্ট বা পণ্য সম্পর্কে অবহিতকরণ এবং ঔষধের চাহিদা সংগ্রহ। এ ছাড়া ডাক্তারদের প্রোডাক্ট লিটারেচার, চ্যাম্পল, প্যাড, কলম ও অন্যান্য উপঢৌকন সরবরাহ করেন ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিরা। অফিস চলাকালে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাব সেন্টার গুলোতে দুপুর ১২টা-দেড়টা এবং অন্যান্য ক্লিনিক বা কেন্দ্রে সকাল ৯ টা-১টা এবং বিকেল ৪টা- ৯/১০টা পর্যন্ত ডাক্তার ভিজিটের নিয়ম থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে রিপ্রেজেন্টেটিবরা এ নিয়ম মানেন না। অন্যদিকে রোগীদের অগ্রারাধিকার দেয়ার কথা থাকলেও তা উপেক্ষা করেন তারা।