প্রকাশিত: ০৫/০৯/২০১৮ ২:৩৫ পিএম
Single Page Top

বিদেশ ডেস্ক:
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা পরিচালনাকারী সেনা সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি করতে চাপ দেবে যুক্তরাজ্য। মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) হাউস অব কমন্সে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনকারীদেরকে ‘অবশ্যই বিচারের আওতায়’ আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদেরকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার প্রস্তাব দিতে তিনি জাতিসংঘের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরকে আহ্বান জানাবেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে।

গত বছরের আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্ব পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ওই অভিযানে জাতিগত নিধনযজ্ঞের আলামত পেয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ মিয়ানমারের মানবাধিকার নিয়ে এক তদন্ত প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে। মিয়ানমার সরকার বারবারই দাবি করে এসেছে যে, নিরাপত্তার স্বার্থে এই অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। কোন নিধনযজ্ঞ চালানো হয়নি। তবে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রত্যাখ্যানের মাত্রায় তারা হতবাক। সামরিক অভিযানে কখনোই হত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, শিশু নিপীড়ন ও গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে বক্তব্য দেওয়ার সময় ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হান্ট বলেন, রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যকে ‘বিশেষ দায়িত্ব’ নিতে হবে। এ মাসের শেষের দিকে তিনি এ ব্যাপারে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন।

পার্লামেন্ট সদস্যদের উদ্দেশ্য করে হান্ট বলেন, ‘যে আকার কিংবা কায়দায় অথবা যে জায়গাতেই জাতিগত নিধন হোক না কেন একে কখনওই বিচারের আওতামুক্ত রাখা উচিত নয়। এ ধরনের জঘন্য অপরাধ সংগঠনকারীদেরকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সেখানে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, শিশুদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে, গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, এবং উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইনে বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চালানো হয়েছে ও গণহারে বিতাড়নের ঘটনা ঘটেছে।’

হান্ট জানান, তিনি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘মন্ত্রীদের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক’ আয়োজনে আগ্রহী। তবে তিনি এ কথাও স্বীকার করেছেন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের কথা সুপারিশ করতে চাইলে এক্ষেত্রে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হবে। আর নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্র এতে সমর্থন দেবে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক খুব গভীর। মিয়ানমারবিরোদী যেকোনও প্রচেষ্টায় দেশটি ভেটো দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।

হান্ট আরও জানান, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ইস্যুটি নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি মিয়ানমার সফরে যেতে চান।

পাঠকের মতামত

Single Page Bottom

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি: এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জাতিগত ...

রয়টার্সের প্রতিবেদনমিয়ানমারের বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, বিদ্রোহীদের পক্ষে টানছে ট্রাম্প প্রশাসন

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদের দিকে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মিয়ানমারের বিরল খনিজে চীনের কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে ...

মিয়ানমার জান্তা ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তাঘনিষ্ঠ চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ ...

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ব্ল্যাকলিস্ট, তালিকায় এক ডজন দেশ

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও ভিসা পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন ...
Single Page Footer