দিনক্ষণ ঠিকঠাক। আগামী সপ্তাতেই লন্ডন থেকে দেশে ফেরার কথা। ২৯ জুলাই বিয়ে। আত্মীয়-স্বজনকে বিতরণ করা হয়েছে বিয়ের কার্ড। বিয়ের অনুষ্ঠান হবে সিলেটের মৌলভীবাজার শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে। কিন্তু আর দেশে ফেরা হলোনা হোসনা বেগম তানিমার। পরা হলো না বিয়ের শাড়িটি!
বুধবার ভোরে লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারের ভবনে লেলিহান বিভীষিকাময় অাগুন পুড়িয়ে দিয়েছে হোসনাকে, আর পুড়িয়ে দিয়েছে তার সব স্বপ্নগুলোকেও। মা বাবা আর ভাইয়ের সঙ্গে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন হোসনা বেগম তানিমা।
২২ বছর বয়সী তানিমা পরিবারের সবার ছোট এবং সবার আদরের পাত্র ছিলেন। মা-বাবার পছন্দেই আগামী ২৯ শে জুলাই বিয়ের দিন ঠিক ছিল তার।
পরিবারটির স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, হোসনার শাড়িসহ বিয়ের সব কেনাকাটাও সম্পন্ন ছিল। বিয়ের হল বুকিংসহ সব কিছু রোজার অাগেই শেষ হয়েছে। লন্ডনে পুড়ে যাওয়া ভবনটির ১৭তলার ১৪৪ নম্বর ফ্ল্যাটে বাবা কমরু মিয়াসহ মা অার ভাইয়ের সাথেই থাকতেন তিনি। তাদের মূল বাড়ি মৌলভীবাজারের আখাইলকুড়া ইউনিয়নের খৈষাউড়া গ্রামে।
সেহরি অার ফজরের নামাজের পর সেই ধেয়ে অাসা যন্ত্রণায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর দুয়ারে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া অার কোনো পথও ছিল না তাদের।
শেষবার ফোনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার অাগে লন্ডনেই অারেকটি বাড়িতে বসবাসরত আরেক ভাইয়ের কাছে ফোন দেয় হোসনা। নিশ্চিত মৃত্যুর ক্রমাগত এগিয়ে অাসা দেখে ভাইয়ের কাছে বোনটি দোয়া চেয়েছিল কেবল কিছুটা কম কষ্টের মৃত্যুর।
ফোনে হোসনা বলছিলেন- ‘আমরা সবাই এখন বাথরুমে, আমাদের বের হওয়ার কোনো উপায় নেই, দোয়া করেন আমাদের যেন কষ্টে মৃত্যু না হয়।’ তখন তিনি বাঁচার আকুতিও জানাচ্ছিলেন।
পাঠকের মতামত