ডেস্ক নিউজ- রাজধানীর কালশি এলাকায় বাস চাপায় নিহত হয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সৌরভ সেজান (২৮)। গতকাল সকাল ১১টার দিকে ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের কালশি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সৌরভ জাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের হলপাড়ায়। তিনি ব্র্যাকসহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণাধীন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, কালশি ফ্লাইওভার দিয়ে হোটেল রেডিসন ব্লুর দিকে নামার সময় বসুমতি নামের একটি বাস ঢাকামেট্রো হ-৫৫-০৫৯০ মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। বাসের ধাক্কায় তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এ সময় আরেকটি বাস এসে তাকে চাপা দেয়। পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পর যাত্রী ও পথচারীরা বাস আটক করলেও চালক ও তার সহযোগী পালিয়ে গেছে।
সৌরভের বন্ধু আদনান খায়রুল্লাহ জানান, কুর্মিটোলা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে মরদেহ ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। সেখানেই তার মরদেহ দাফন করা হবে। তিনি বলেন, পরিবারের বড় ছেলে ছিলেন সৌরভ। বাবা-মা ছাড়া তার এক বোন রয়েছেন। বছরখানেক আগে বিয়ে করেছিলেন। স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে থাকতেন।
এদিকে শাহরিয়ার সৌরভ সেজানের মৃত্যুতে শোক বইছে তার আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের মধ্যে। তার মৃত্যুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সেই সঙ্গে ঘাতক বাসচালককে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান সকলে। প্রিয়বন্ধুকে হারিয়ে অনেকেই সামাজাকি যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের শোক ও সমবেদনার কথা লিখেছেন। মো. আবু আশরাফ নামের একজন লিখেছেন, কাকে দোষ দেবেন?! বিচারটাই বা কাকে দেবেন!? কয়জন মানে ট্রাফিক আইন?! হাফ-ফিট বাসগুলা এই দেশে বেপরোয়াভাবে চালানোর সুযোগ পায়। টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স ফিটনেস বিক্রি হয়। দেশটাতো মরে গেছে অনেক আগেই। এখন মানুষগুলোও মরে যাচ্ছে আস্তে আস্তে। যারা বাইক চালান, একটু সাবধানে চালাবেন। আপনার জীবন আগে...। দেব কুমার ঠাকুর লিখেছেন, কী লিখবো বুঝতে পারছি না? বড্ড অসময়ে চলে গেলি। তোর সঙ্গে আমার পরিচয় আমার রুমমেট জুয়েল রানার মাধ্যমে। একসঙ্গে কত সময় কাটিয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে। তাহের ভাইয়ের দোকানে আড্ডা, কামালউদ্দিন হলে আমার আর জুয়েলের রুমে বসে তোদের বিভাগের কতশত গল্প। তোদের সঙ্গে সম্পর্কটা এতটাই ভালো ছিল আমার নিজ ডিপার্টমেন্টের বন্ধুরাও হিংসা করতো। এইভাবে চলে যাবি কখনো ভাবিনি। আপনজন হারানোর বেদনা সহ্য করা যায় না। পরপারে ভালো থাকিস। স্রষ্টা মুনিয়াকে শোক সহ্য করার সামর্থ্য দিক।