কক্সবাজার শহরে ফুটবল খেলার বিরোধ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের ৩০ জন আহত হয়েছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে মোস্তাক নামে একজনের দুই হাত দ্বিখন্ডিত হয়ে যায়। এবং চোখ উপড়ে যায় সাগর নামে অপর একজনের।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সাত দিন আগে পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের সমিতি পাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়ার মধ্যে ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এতে জয়–পরাজয় নিয়ে দুই এলাকার লোকজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সমিতি বাজারের একটি দোকানে ফুটবল ম্যাচের ফলাফল নিয়ে দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সমিতি পাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়ার লোকজন দলবেঁধে দা, ছুরি, কিরিচ, হকিস্টিক ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলে পড়ে। সারাদিন চলে দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা–ধাওয়া। এ সময় আগুন দেওয়া হয় রাস্তায়, পুড়িয়ে ফেলা হয় মোটরসাইকেল, লুট করা হয় দোকানপাট। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়। আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারমধ্যে ২ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। ঘটনার ৫ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টিম গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আশিকুর রহমান বলেন, আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। দুজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার কামাল বলেন, ফুটবল খেলার বিরোধ নিয়ে সমিতি পাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়া কয়েকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। আমি উভয়পক্ষকে দমানোর চেষ্টা করেও পারিনি। মূলত কুতুবদিয়া পাড়ার লোকজনকে সমিতি পাড়া হয়ে চলাফেরা করতে হয়। তাই সমিতি পাড়ার কতিপয় সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের নিয়ে এই হামলা চালায়। এখনো তারা কুতুবদিয়া পাড়ার লোকজনকে চলাফেরা করতে দিচ্ছে না। বন্ধ করে রেখেছে যান চলাচল। সংঘর্ষ থামাতে আমি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের কাছে ধর্ণা দিয়ে এলাকায় নিয়ে যাই। এখন আমার বিরুদ্ধেও তারা নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। হামলা করা হয়েছে আমার স্ত্রীর ওপর।
এ বিষয়ে কঙবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামু সেনানিবাসের ৯ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর হোসেন এলাকায় শান্তি–শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানান সকলকে। তিনি বলেন, যারা অন্যায়ের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনভাবেই এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করা যাবে না।
পাঠকের মতামত