উখিয়া নিউজ ডেস্ক ::
চাঁদপুর টেকনিক্যাল এলাকার জানিবুল নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে বিয়ের পর রোহিঙ্গা নারীকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে চাঁদপুর শহরের টেকনিক্যাল বনবিভাগে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রোহিঙ্গা নারী সানোয়ারা (৩০)।
এ ঘটনায় নিহত সানোয়ারার পিতা নূরুল হক কক্সবাজার উখিয়া থানায় একটি হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে জানিবুলের পারিবার সূত্রে জানা যায়, কি কারনে সানোয়ারা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তা তারা অবগত নয়। তবে মারা যাওয়ার ক’দিন পূর্বে তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে বলে জানায় পরিবার।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জীবন রক্ষার তাগিদে সমুদ্র পাড়ি দিয়ে মায়ানমার থেকে গত ২৭ বছর পূর্বে নিহত গৃহবধু সানোয়ারা তার পরিবারের সাথে বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় কক্সবাজার উখিয়া থানার কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পে তারা আশ্রয় নেয়।
আশ্রয় ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় চাঁদপুর বাবুরহাট খলিসাঢুলি এলাকার মো. ফজলুল হকের ছেলে কুমিল্লা সেনা নিবাসে কর্মরত জানিবুল হকের সাথে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
সে পরিচয়ের সূত্র ধরে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ৯ জুন ২০১০ সালে সানোয়ারার সাথে জানিবুলের বিয়ে হয়। বিয়ের পর সানোরাকে নিয়ে জানিবুল ঢাকা ১৭/১০ স্বামিবাগ এলাকায় বসবাস করতে শুরু করে।
এদিকে জানিবুল, তার মা সোহিলী হক ও ভাই সোহাগ ও সাগর প্রায়ই নিহত হোসনেআরাকে বিয়ের পর থেকেই মারধর করতো বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
গত ৩ মাস ধরে হোসনে আরাকে নিয়ে জানিবুল চাঁদপুর টেকনিক্যাল বনবিভাগ এলাকার বাসায় নিয়ে আসে।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, জানিবুলের মা ও ভাইয়েরা গৃহবধু হোসনে আরাকে শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করতে থাকে। এ বিষয়ে হোসনে আরা তার মা হালিমাকে জানালেও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেন নি।
অবশেষে শুক্রবার দিবাগত রাতে হোসনেআরা মৃত্যু বরণ করে।
এ মৃত্যুর ঘটনায় শরনার্থী ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা নিহত হোসনে আরার মা হালিমা খাতুন, ভাই মূসা খলিল, ওমর ফারুক ও খালা রফিয়া বেগমকে চাঁদপুরে পাঠিয়ে দেয়।
নিহত হোসনে আরার মা হালিমা জানায়, ‘আমার মেয়ে গত শুক্রবার দিনে আমাকে মোবাইল ফোনে জানায় তাকে তার স্বামী জানিবুল মাথা ও শরীরের আঘাত করে। এরপর আর কিছু বলতে পারেনি। সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। রাতে জানিবুল ফোন করে আমাকে হোসনে আরার মৃত্যুর খবরটি জানায়।
চাঁদপুর মডেল থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অনুপ চক্রবর্তী জানায়, প্রাথমিক তদন্তে নিহত গৃহবধূর গায়ে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ময়না তদন্তের পর তা স্পষ্ট বোঝা যাবে।
নিহত হোসনেয়ারার খোঁজ নিতে আসা তার ভাই ওমর ফারুক জানান, ‘রোহিঙ্গারা মায়ানমারেও মার খাচ্ছে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাংলাদেশে এসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করতে হলো আমার বোনকে।’ এ ঘটনার পর থেকে স্বামি জানিবুল পলাতক রয়েছে বলে তারা জানায়। সুত্র:: চাঁদপুর টাইমসকে