
রাখাইনে চলমান সেনা নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের খাবার জুগিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছে শিখ সংগঠন ‘খালসা এইড’। প্রতিদিন ৩৫ হাজার রোহিঙ্গার মুখে খাবার তুলে দেয় ভারতীয় এই শিখ সংগঠনটি। যখন সীমান্তের কাঁটাতারের রাজনীতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থায় উন্মত্ত বিশ্ব, তখন মানবতার এমন উদাহরণ দৃষ্টি করেছে সবার। ভয়াবহ রোহিঙ্গা সংকটে যখন তাবৎ পৃথিবীর মোড়লেরা মুখে কুলূপ এঁটে বসে আছে, তখন মানবতার ডাকে সাড়া দেওয়া এই শিখ সংগঠনটির ভূমিকায় অভিভূত হয়ে প্রশংসার জোয়ারে ভাসিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর খবরে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি নিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে ‘গুরু কা লঙ্গর’ নামে ক্যাম্প খুলেছে ‘খালসা এইড’।
নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত চার লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫০ হাজার রোহিঙ্গার পাশে দাঁড়াতে চায় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে খালসা এইডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমরপ্রীত সিং বলেন, এই মুহূর্তে যত সংখ্যক রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে, সবার পাশে দাঁড়ানোটা কঠিন হবে। রোহিঙ্গাদের মুখে প্রতিদিন ৩৫ হাজার খাবার তুলে দেওয়াই প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট না। তারা খাবার অভাবে প্রচণ্ড ভুগছে। পরিস্থিতি দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
তাদের ক্যাম্পে অস্থায়ীভাবে রান্নাবান্নার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অমরপ্রীত বলেন, ‘আমরা চাল, ডাল ও অন্যান্য জিনিসপত্র কিনেছি। তা রান্না করে ইতোমধ্যে খাবার বিতরণ শুরু করেছি।’
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির আরেকটি দল দিন কয়েকের মধ্যে ত্রাণের সহায়তার জন্য পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর গণহত্যা আর ভয়ংকর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে গত ২৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত চার লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সংস্থাটি জানায়, পালিয়ে আসা এসব শরণার্থীদের প্রায় ৬০ শতাংশ শিশু।
যদিও বেসরকারি হিসেবে বাংলাদেশে আসা মোট শরণার্থীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বেসরকারি হিসাব সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো জানিয়েছে, তাদের নিবন্ধনের কার্যক্রম এখনও শেষ হয়নি। এদিকে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্যে জরুরি খাবার পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্য সামগ্রী নিয়ে ইউনিসেফের ট্রাক কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছে।
পাঠকের মতামত