
মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া
কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার একটি সরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই স্কুলের ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক হত দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীকে শ্রেণী কক্ষেই অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সামনে প্রকাশ্যেই ‘চুলের মুঠি’ ধরে বেধড়ক মারধরসহ নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ওই ছাত্রীকে পেকুয়া সরকারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে, আজ ১৪ জুন দুপুর ১ টার দিকে পেকুয়া উপজেলার পূর্ব মগনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যলয়ে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে আসামী করে ১৪ জুন রাত ১১টার দিকে পেকুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক কর্তৃক অমানবিক নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন অংশে বেত্রাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ছাত্রীকে এলোপাতাড়ি পিঠিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের অমানবিক নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। হাটা চলাও করতে পারছেনা। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম আশুতোষ নাথ। তিনি পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিনের পূর্ব মগনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছে। তার বাড়ি বারবাকিয়া ইউনিনের নাথ পাড়া গ্রামে।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের ধারিয়াখালী গ্রামের হত দরিদ্র শফিউল আলমের শিশু কন্যা শরমিন বেগম পূর্ব মগনামা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীতে পড়ুয়া একজন নিয়মিত ছাত্রী। তার কন্যা নিয়মিত স্কুলে যায়। ১৪ জুন সকালে তার কন্যার সাথে একই বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক সহপাটির ঝগড়া হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক দুই জনেরই বিচার না করে আক্রোশমূলকভাবে তার অসুস্থ কন্যা শরমিন আক্তারকে চুলের মুঠি ধরে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালিয়েছে।
১৪ জুন বিকাল ৪টার দিকে বিদ্যালয় থেকে বাড়ীতে ফিরে এসেও প্রধান শিক্ষক কর্তৃক মারধর-নির্যাতনের বিষয়টি পরিবারের কাউকে বলেনি। রাত ৯টার দিকে শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুলা জখম দেখতে পেয়ে তার কন্যাকে জিজ্ঞাসা করা হয়। এসময় তার কন্যা শরমিন জানায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ নাথ তাকে ‘চুলের মুঠি’ ধরে সহপাঠিদের সম্মুখে অমানবিকভাবে মারধর করেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে তাকে বেত্রাঘাত করা হয়েছে। মারধরের সময় তিনি কান্নাকাটি করেও স্যারের মন গলেনি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আশুতোষ নাথে বক্তব্য জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, তার ভুল হয়ে গেছে।
ভূক্তভোগী ছাত্রীর পিতা শফিউল আলম এ ঘটনায় নির্যাতনকারী প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন।
পেকুয়া থানার ওসি মো: ফরহাদ আলী জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে রাত ১০ টার দিকে পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ছালামত উল্লাহ খান ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাষ্টার হানিফ চৌধুরীর কাছে আহত কন্যাকে নিয়ে দেখা করে প্রধান শিক্ষকের বিচারও দাবি করেছেন ছাত্রীর পিতা। এসময় শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
পাঠকের মতামত