নিউজ ডেস্ক::
আরাকানের রোহিঙ্গারা এখন দু‘টানায় । মানবেতর জীবন যাপন তার একমাত্র গল্প এবং সম্ভ্রম রক্ষায় তাঁদের একমাত্র দাবী। কয়েক বছর পরপর মায়নামারে একটা ইস্যুকে কেন্দ্রকে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। প্রতিবারেই বিশ্ব গণমাধ্যমে বিশেষ স্থান পায় ,রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের চিত্র, কিছু দিন পরে শেষ হয় শিরোনাম এরপর ঘটনার রেশ টানে পত্রিকার পাতার বক্স স্টোরি কিন্তু ইতোমধ্য কিছু মানুষ লাভবান হয় নানাভাবে আর কিছু সাধারণ মানুষের লোকাসান হয় জীবনের তরে। আরাকানের রহম রহম করা রোহিঙ্গা নারীরা সেই লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে ১৯৮২ সালের পর থেকে । সর্বশেষ ২০১২ এবং ২০১৬ তে আবার নতুন তালিকা উঠে আসে মানবিক স্টোরিতে যেখানে অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী গণ ধর্ষণের খবর উঠে আসে। ধর্ষণের চিত্র সবার দেখা গণমাধ্যমের কল্যাণে কিন্তু ধর্ষণ পরবর্তী খবর শুধু সেই জানে যে ধর্ষিতা হয়েছে। স্বামী তার স্ত্রীর ইজ্জত রক্ষা করতে না পেরে দেশান্তর হয়েছে গুলাগুলির সময় কিন্তু পরবর্তী সময় এসে সেই অসহায় অবেহেলা করে নতুন নারীকে নিয়ে ঘর বাঁধার খবর তুলপাড় করছে বিশ্ব গণমাধ্যমে।
নাফ নদীর ঐ পাড়ে তারা ধর্ষণের স্বীকার হয়ে যত না কষ্ট পেয়েছে তারপর তাঁদের স্বামীরা তাঁদের অবেহেলা করে তাঁদের মানবিক হৃদয়কে ধর্ষণ করেছে বহুবার । বাংলাদেশের এই পাড়ে যারা পালিয়ে আসছে তারা গণহারে বিয়েতে লিপ্ত হচ্ছে দালাল চক্রের হাত ধরে। জীবন বাঁচানোর তাগিদে আর সংসার বাঁধছে অজানা ঘরে হয়তো এই ঘরে আবার নতুন করে হারারে বাঁচিয়ে রাখা বাকি সম্ভল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের বরাত থেকে জানা যায় , মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত বছর দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গণধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গা নারীদের তালাক দিচ্ছে তাদের স্বামীরা। রাখাইনের গ্রামগুলোতে সৈন্যদের অভিযান থেকে বাঁচতে পুরুষরা সব পালিয়ে গিয়েছিল। তারা পেছনে ফেলে গিয়েছিল শিশু, নারী আর বৃদ্ধদের। এ সময় অসহায় নারীদেরকে গণহারে ধর্ষণ ও হত্যা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
বিশ বছর বয়সী রোহিঙ্গা মুসলিম নারী আয়মার ধর্ষণের পর সে যখন তার স্বামীকে জানান যে তার গর্ভাবস্থার একেবারে শেষ পর্যায়ে মিয়ানমারের সৈন্যরা তাকে গণর্ধষণ করে, তখন তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান। মিয়ানমারের সরকার পরিচালিত একটি সফরে রাখাইন প্রদেশে গিয়ে আয়মারের সঙ্গে কথা বলে। তিনি কায়ার গং টং নামে একটি গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামে সরকারি লোকজনের অজ্ঞাতসারে একদল রোহিঙ্গা মহিলার সঙ্গে কথা বলেন এএফপির সাংবাদিক। তারাই সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের কাহিনী বর্ণনা করেন ওই সাংবাদিকের কাছে। ছোট্ট একটি কন্যাশিশু কোলে আয়মার আরও বলেন বলেন, ‘সন্তান প্রসবের মাত্র কয়েকদিন আগে আমাকে ধর্ষণ করা হয়। আমার তখন নয় মাস চলছিল। তারা জানত আমি গর্ভবতী, কিন্তু তাতেও দমেনি তারা।’ তিনি বলেন, ‘এর জন্য আমাকে অভিযুক্ত করে আমার স্বামী। এ কারণে সে অন্য এক মহিলাকে বিয়ে করে আরেক গ্রামে গিয়ে থাকছে এখন।’ দুই সন্তানের মা হাসিন্নার বায়গনের বয়সও কুড়ি।
নাফ নদীর টেকনাফ পাড়েই নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গারা এখানকার গল্প একটু ভিন্ন। ‘যুদ্ধময়’ পরিবেশ থেকে ফিরে কোন কিছুই বাছ-বিচার করতে পারে না তারা। বাঁচার তাগিদের যে যাই বলে তাই করে আর এর মধ্য সুবিধা নিচ্ছে একদল অসাধু লোক যারা বিয়ের নামে দুর্বলতার সুযোগ গ্রহণ করছে। শুধুমাত্র মৌখিক ‘আমিন’ বলে বিয়ে করে ভোগ করছে অনেকে।
বিয়ের গোপন উৎসবে মেতেছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। আর স্থানীয় তরুণদের নিয়ে চিন্তিত তাদের আত্মীয় স্বজন। বিয়ের কারণ একটায় আশ্রয় লাভ করা। মিয়ানমারে বর্বর হামলা চলাকালে দুইভাবে এই সুবিধা নিয়েছে সুবিধাভোগী মানুষ। প্রথম একদল যুবককে দেখা যায় যারা বিভিন্ন সময় মিয়ানমার আর্মির বিপরীতে ‘যুদ্ধ’ করছে যাদেরকে মিয়ানমার আর্মি ‘জঙ্গি’ হিসেবে দাবী করছে। আরাকান রাজ্য বসবাস করতে হলে তাদের সাথে কাঁধে কাধ মিলিয়ে অস্ত্র ধরতে হবে, সেই অসুবিধা দেখিয়ে অনেকে ওদের নিয়ে পাড়ি জামাচ্ছে বাংলাদেশে যদিও এখন একটু কম। তারাও বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে। দুই, আরেকদল আছে যারা নৌকায় করে রোহিঙ্গাদেরকে এই পারে তথা বাংলাদেশের এই পাড়ে নিয়ে আসছে বর্ডার গার্ডকে ফাঁকি দিয়ে। যতক্ষণ পর্যন্ত নৌকায় থাকে সেই অল্প সময়য়ে তাদের সাথে এই দেন দরবার চলে। এই অল্প সময়েও অনেকে মৌখিক বিয়ে করে ফেলে। অনেকে আবার নির্যাতনের শিকার হয়। তৃতীয়, যারা সাময়িক সময়য়ের জন্য আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গা ক্যাম্প। সময় হতে পারে এক রাত কিংবা একদিন, সেসব ঘরগুলোতে আশ্রয় নেয় সেখানে ছেলে মেয়ে মিলে ১০/১২ জনের বসবাস। সেখানে এই প্রস্তাব থেকে রেহায় পায় না তারা। চতুর্থ, যারা কোন আশ্রয় পায় তাদের উপর শুরু হয় নানা হুমকি দমকি যাতে বিয়ে করে। বিডি মরনিং
পাঠকের মতামত