প্রকাশিত: ০২/১০/২০১৭ ৭:১৬ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:৪৮ পিএম

ভারতে যাবার জন্য বাংলাদেশিদের হাতে আছে তিনরকমের উপায়, একটা হল স্থলপথে বাস, স্থলপথে ট্রেন ও আকাশপথে বিমান। ইদানীংকালে ভারত-বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে, তাই যাওয়া আসাও হয়েছে অনেক সহজ। আজ আমরা কথা বলব ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী ট্রেন নিয়ে।

আবার নতুন করা নিয়ম, যেকোনো পোর্টে এন্ট্রি থাকলে আকাশ, রেল ও হরিদাশপুর হয়ে স্থলপথে ভারতে প্রবেশ করার সুবিধা দেয়ায় বিষয়টা হয়ে গেছে আরও অনেক সহজ। আর তাই যে কোন পোর্টের এন্ট্রি/এক্সিট থাকলে আপনি খুব সহজেই ট্রেনে করে ঢাকা থেকে কলকাতা যেতে পারেন। ট্রেনে খরচ কম, ঝামেলা কম এবং আগামীতে যে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেটা ৩রা নভেম্বর শুরু হলে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত ঝামেলা সবাই ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকেই করে যেতে পারবেন, তাই ঝামেলা আরও কমছে।

তাই যারা ট্রেনে করে কলকাতা যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য মৈত্রী ট্রেন এর সময়সূচী, ভাড়া ও অন্যান্য তথ্য আজ দেয়া হল।

* মৈত্রী ট্রেন ঢাকা থেকে সকাল আটটা দশ মিনিটে (০৮:১০) ছাড়ে। কলকাতার চিতপুর স্টেশন থেকে ছাড়বে সকাল সাতটা ১০ মিনিটে।

* ছাড়বার স্থান হল ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন।

* টিকিট ক্রয় করতে হয় একমাত্র কমলাপুর স্টেশন থেকে। অন্যকোথাও কাটা যায় না।

* ট্রেন এর রিটার্ন টিকিট কাটা সম্ভব কমলাপুর স্টেশন থেকেই। তবে রিটার্ন টিকিটের মাত্র ২০ শতাংশ দেয়া হয় ঢাকা থেকে। বাকি ৮০ শতাংশ কলকাতা থেকে কাটার জন্য বরাদ্দ থাকে। তাই রিটার্ন টিকিট কিনতে পারাটা কিছুটা ভাগ্যের বিষয়।

* আপাতত সপ্তাহে তিনবার করে আপ এবং ডাউন করছে মৈত্রী। তবে সামনে আরও বাড়বে বলে শোনা যায়।

* ঢাকা থেকে কলকাতা: শুক্রবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৭), শনিবার (রেলগাড়ি নং ৩১১০), রবিবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৭), বুধবার (রেলগাড়ি নং ৩১১০)।

* কলকাতা থেকে ঢাকা: শনিবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৮), সোমবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৮), মঙ্গলবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৯), শুক্রবার (রেলগাড়ি নং ৩১০৯)।

* ট্রেন ঢাকা থেকে কলকাতা পৌছাতে সময় নেবে প্রায় বারো ঘণ্টা। সাধারণত সন্ধ্যা সাতটা দিকেই পৌঁছে যায়, তবে ইমিগ্রেশন ও বিভিন্ন কারণে দেরি হতে পারে।

* ট্রেন কলকাতা থেকে ঢাকা পৌছাতে সময় নেবে প্রায় বারো ঘণ্টা, সাধারণত বারো ঘণ্টা সময় লাগে, তবে ইমিগ্রেশন ও বিভিন্ন কারণে দেরি হতে পারে।

* ঢাকা টু কলকাতা পথের দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার।

টিকেটের মূল্য: মৈত্রী ট্রেনে করে কলকাতা যাওয়া বাসের তুলনায় বেশ সস্তা। তাই অনেকেই এটাই চেষ্টা করেন।

এসি ফার্স্টক্লাস কেবিন: ২০ ডলার + ১৫% ভ্যাট + ৫৪০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স (১৬৪০ + ২৪৬ + ৫৪০) = ২৪২৬ টাকা।

এসি চেয়ার কার: ১২ ডলার + ১৫% ভ্যাট + ৫৪০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স (৯৮৪ + ১৪৭ + ৫৪০) = ১,৭৭০ টাকা।

৫০ শতাংশ ডিসকাউন্ট রয়েছে ১ থেকে ৫ বছরের শিশুদের জন্য। বয়স নির্ধারণ করা হবে পাসপোর্টে উল্লেখিত জন্মতারিখ অনুসারে। ৫ বছর এর উপরে হলে পুরো টিকিট করতে হবে। আন্তর্জাতিক পরিবহন বলে খরচের হিসেবটা ডলারে দেখানো হয়েছে। সময়ে সময়ে সেটা কিছুটা ওঠানামা করতে পারে।

এর আগে ট্রাভেল ট্যাক্স ছিল জনপ্রতি ৫০০ টাকা। সেটা এখন জনপ্রতি ৫৪০ টাকা হয়েছে শুধুমাত্র বেনাপোল ও ট্রেন এর যাত্রীদের জন্য গত ১লা জুলাই থেকে।

টিকিট কোথায় পাওয়া যাবে?

ভারত বাংলাদেশ ট্রেন মৈত্রী ট্রেন এর টিকিট পাওয়া যায় একমাত্র কমলাপুর স্টেশনে। টিকিট নেবার সময় সকাল নটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত। ত্রিশ দিন পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট নিতে পারবেন, তবে পাঁচ বা ছয় দিন আগে গেলে টিকিট নাও পেতে পারেন। সস্তা ও আরামদায়ক হবার কারণে অনেকের প্রথম পছন্দ থাকে ট্রেন। ত্রিশ দিনের আগে কোনভাবেই অগ্রিম টিকিট নিতে পারবেন না।

ব্যাগেজ: ভ্রমণে ব্যাগেজ একটা বেশ বড় ঝামেলাই বটে, আর যদি হয় লম্বা জার্নি, তাহলে তো কথাই নেই। যেহেতু আপনি আন্তর্জাতিক ভ্রমণ করছেন, তাই ব্যাগেজ বিষয়ে আপনাকে সচেতন হতে হবে। কারণ আপনাকে ইমিগ্রেশন পার হতে হবে।

সর্বোচ্চ কত কেজি? একজন পূর্ণবয়স্ক যাত্রী ত্রিশ কেজি পর্যন্ত বাড়তি খরচ করা ছাড়াই নিতে পারবেন। সাথে যদি শিশু থাকে, তার ক্ষেত্রে ২০ কেজি পর্যন্ত বাড়তি খরচ ছাড়া নেয়া সম্ভব।

বাড়তি লাগেজ এর জন্য বাড়তি চার্জ? বাড়তি চার্জ এর পরিমাণ আসলেই বেশি পড়ে যায়। ৩১ কেজি থেকে ৫০ কেজি পর্যন্ত নিতে হলে প্রতি কেজিতে বাড়তি দিতে হবে দুই ডলার সমপরিমাণ অর্থ। ৫১ কেজি থেকে ১০০ কেজি পর্যন্ত প্রতি কেজিতে বাড়তি দিতে হবে ১০ ডলার। এই বিশাল পরিমাণ খরচ বাঁচাবার জন্য সেরা উপায় হল, লাগেজ এর ওজন ৩০ কেজির মাঝেই সীমাবদ্ধ রাখলে।

লাগেজ এডজাস্টমেন্ট: তবে কয়েকজন গেলে ওজন এডজাস্ট করার সুযোগ রয়েছে। মনে করুন আপনার লাগেজ চল্লিশ কেজি, আপনার সঙ্গীর লাগেজ এর ওজন বিশ কেজি। দু’জনে মিলে ষাট কেজি হলে সমস্যা হবে না।

সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই ট্রেনে যাওয়া যথেষ্ট আরামদায়ক। মাঝে ইমিগ্রেশন এর কাজ সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে নামতে হবে সীমান্তে। সেখানে দর্শনা রেলস্টেশনে লাগেজ সহ নেমে সেগুলো স্ক্যান করিয়ে বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন থেকে পাসপোর্টে এক্সিট সীল নিতে হবে। এর পরে আবার ভারতের দিকে গিয়ে লাগেজ স্ক্যান করিয়ে ভারত ইমিগ্রেশন থেকে এন্ট্রি সীল দিয়ে নিতে হবে পাসপোর্টে। এই সময় দালাল থেকে সাবধান থাকবেন। অনেক সময় সাধারণ বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়ে ও ভয় দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে সামান্য কাজের বিনিময়ে চড়া মূল্য আদায় করবে তারা।

তথ্যসূত্র: শামস জামান

পাঠকের মতামত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কিত প্রস্তাব গৃহীত

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে ...

৯০ দিনের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে স্টারলিংক চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ...

জুলাই আন্দোলনে আহতদের পাশে থাকবে সেনাবাহিনী : সেনাপ্রধান

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-ছাত্রীদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার ও নৈশভোজ অনুষ্ঠানে কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। ...