প্রকাশিত: ২১/১১/২০১৬ ৩:১৬ পিএম

wirathu_31458_1479718961অনলাইন ডেস্ক:
মিয়ানমারের বিতর্কিত বৌদ্ধভিক্ষু অশিন ভিরাতু। রক্তক্ষয়ী মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণার কারণে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে কুখ্যাত তিনি।

তার উস্কানিতে ২০১২ সালে অন্তত দুইশ’ রোহিঙ্গা মুসলিমকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা এবং দেড় লাখকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল।

সেই ভিক্ষু ভিরাতু বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি নিজের মতো মনে করেন।

আর মুসলিম বিদ্বেষী হওয়া সত্ত্বেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার ঘটনাকে নিজের মুসলিম বিদ্বেষী নীতির যথার্থতার প্রমাণ বলেও দাবি করেন।

বিতর্কিত ভিক্ষু ১৯৬৮ সালে জন্ম নেন। ১৪ বছর বয়সে স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে তিনি ভিক্ষুর পেশা গ্রহণ করেন।

তার নেতৃত্বে ২০০১ সাল থেকে মুসলিম বিদ্বেষী ‘৯৬৯’ আন্দোলন গড়ে উঠলে ব্যাপক পরিচিতি পান অশিন ভিরাতু।

অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ২০০৩ সালে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। তবে সাত বছর পরে মিয়ানমারের স্বৈরসরকারের সঙ্গে আঁতাত করে মুক্তি পান তিনি।

জেল থেকে বেরিয়েই ফের মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণা শুরু করেন ভিক্ষু ভিরাতু। সামাজিক মাধ্যমে তার প্রভাবে সাম্প্রদায়িকতায় দীক্ষিত হয় মিয়ানমারের অনেক বৌদ্ধ তরুণ।

২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে ভিরাতুর উস্কানিতেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর হামলা চালিয়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ, ধর্ষণ, লুটপাটে ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

ভিরাতুর এমন সন্ত্রাসী চরিত্রের বিষয়টি বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয় ২০১৩ সালের জুনে টাইম ম্যাগাজিনে ‘বৌদ্ধ সন্ত্রাসীর মুখ’ নামে প্রচ্ছদ প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর।

তবে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার পরেও ভিক্ষু ভিরাতুর মধ্যে সংযত হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।

বরং গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইংঘি লিকে ‘শূয়র’, ‘বেশ্যা’ বলেও গালি দেন মুসলিম বিদ্বেষী ভিরাতু।

তবে এ বছর মিয়ানমারে স্বৈরশাসনের অবসান হয়ে নোবেল জয়ী অং সান সুচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি বেসমরিক সরকার গঠন করলে ভিরাতুর রাষ্ট্রীয় মদদ পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু গত ৮ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেকে নতুন করে তুলে ধরার স্বপ্ন দেখছেন ভিক্ষু ভিরাতু।

রাখাইনে গত দেড় মাস ধরে চলমান রোহিঙ্গা মুসলিম বিরোধী সংঘাতের মধ্যেই ভিরাতু তার মুসলিম বিদ্বেষের পক্ষে সাফাই বক্তব্য দেন।

তিনি বলেন, সারা বিশ্ব আমাদের অপবাদ দিয়েছে। কিন্তু আমরা শুধু আমাদের জনগণ এবং দেশকে রক্ষার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব আমাদের সঙ্কীর্ণমনা বলে একঘরে করে দিয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের দাদা দেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমার মতোই জাতীয়তাবাদকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে আমাদের প্রতি কম আঙ্গুল উঁচু হবে।

মুসলিম বিদ্বেষী ভিরাতু তার বিতর্কিত আইডিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়তাবাদীদের সহযোগিতা করার কথাও বলেছেন।

তিনি বলেন, আমেরিকায়ও আমাদের মতো সংগঠন থাকতে পারে, যারা ইসলামীকরণের নিজ দেশকে রক্ষা করবে। এ ধরনের সংগঠনকে মিয়ানমারের ৯৬৯ আন্দোলনের কাছে এসে শলাপরামর্শ করারও প্রস্তাব দেন তিনি। সুত্র : যুগান্তর

পাঠকের মতামত

৫ বছর পর জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু জান্তাশাসিত মিয়ানমারে

অবশেষে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমারে। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের ...

মিয়ানমারে জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করতে ‘নৃশংসতা’ চালাচ্ছে জান্তা: জাতিসংঘ

মিয়ানমারের জান্তা আসন্ন সেনা-নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনে জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করতে সহিংসতা চালাচ্ছে এবং ভয়ভীতিও প্রদর্শন ...

দিল্লির পর কলকাতাতেও বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ

ভারতের নয়াদিল্লির পর এবার কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের (ডেপুটি হাইকমিশন) সামনে বিক্ষোভ করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। মঙ্গলবার ...

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জাতিসংঘ মহাসচিবের, বিচার নিশ্চিতের আহ্বান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ...

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি জানুয়ারিতে

রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। ...

জেনেভায় রোহিঙ্গা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, অগ্রগতি তুলে ধরবে বাংলাদেশ

‘গ্লোবাল রিফিউজি ফোরাম (জিআরএফ) প্রোগ্রেস রিভিউ ২০২৫’ শুরু হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ...