ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৮/০৪/২০২৩ ৮:২২ এএম

কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে ট্রলার থেকে ১০ লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। এ নিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হলো। পাশাপাশি মহেশখালীর সোনাদিয়া চ্যানেলের প্যারাবন থেকে আরও একজনের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের সোনাদিয়া চ্যানেলের প্যারাবন থেকে কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়। কঙ্কালটি ওই ট্রলারে থাকা নিখোঁজ জেলের বলে ধারণা করছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‌‘বুধবার রাতে চকরিয়ার বদরখালী এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন মুনির (৩২) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। মুনির বদরখালী এলাকার মো. নুর নবীর ছেলে। বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠিয়ে তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। তবে রিমান্ড শুনানি হয়নি।’

একই দিন সকালে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই জনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে র‌্যাব। বাঁশখালীর কুদুকখালী থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে তাদেরও গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তারা হলেন বাঁশখালীর কুদুকখালী এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে ফজল কাদের মাঝি (৩০) ও একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে আবু তৈয়ব মাঝি (৩২)।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে প্যারাবন থেকে উদ্ধার কঙ্কালটি ট্রলারে থাকা নিখোঁজ জেলের বলে ধারণা করছি আমরা। কারণ স্থানীয় জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, ওই ট্রলারে ১১ জেলে ছিলেন। ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, একজন নিখোঁজ ছিলেন। উদ্ধার কঙ্কালটির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এদিকে, সদর হাসপাতালে ১০ লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘কারও শরীরে গুলি কিংবা অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের হাত-পা বেঁধে আটকে রেখে হত্যার বিষয়টি পরিষ্কার।’

তিনি বলেন, ‘রিমান্ডে থাকা মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি কামাল প্রকাশ ওরফে বাইট্টা কামাল এবং ৪ নম্বর আসামি করিম শিকদার ঘটনার বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে। এর সূত্র ধরে চলছে তদন্ত। মঙ্গলবার বিকালে মাতারবাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল।’

কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন হবে।’

এর আগে গত রবিবার সকালে রশি দিয়ে একটি ভাসমান ট্রলার টেনে বাঁকখালী নদীর মোহনা সংলগ্ন নাজিরারটেক পয়েন্টে নিয়ে আসেন স্থানীয় জেলেরা। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রলার থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। এ সময় কয়েকজনের হাত-পা বাঁধা ছিল। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। রবিবার বিকাল ও সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালের মর্গে এসে স্বজনরা ১০ জনের লাশ শনাক্ত করেন।

স্বজনদের দাবি, নিহতরা হলেন হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে ট্রলার মালিক সামশুল আলম (২৩), শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮), জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ (১৮), মুসা আলীর ছেলে ওসমান গনি (১৭), সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ (২৩), মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ (১৪), মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির (২৮), চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৪), শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৫) ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া (২৫)।

মঙ্গলবার বিকালে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর ছয় জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। বাকি চার লাশ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। কারণ লাশগুলো এতই বিকৃত হয়েছে যে, কে কার স্বজন তা নিশ্চিত করা কঠিন। এ জন্য সেগুলোর ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় সিআইডির হেডকোয়ার্টার্সে পাঠানো হয়েছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর লাশ হস্তান্তর করা হবে। ওই দিন বিকালে চার জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন নিহত ট্রলার মালিক সামশুল আলম মাঝির স্ত্রী রোকেয়া বেগম।

পাঠকের মতামত

নিরাপত্তার চাদরে কক্সবাজার

কক্সবাজার পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে কে নিরাপদ, কে অনিরাপদ, ব্যক্তিগত আক্রমন ও নানা তর্কবিতর্কের মধ্যদিয়ে ...

কক্সবাজারে মোবাইল সেটের আইএমইআই পরিবর্তন করে বিক্রির অভিযোগে পাঁচজন আটক

বিশেষ সফটওয়্যার দিয়ে মোবাইল সেটের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তন করে বিক্রি করার অভিযোগে ...