লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউছুফ আলী। কিন্তু জাতীয় তথ্য বাতায়নে তার নামের শেষে লেখা ‘ভোট চোর’। এই শব্দযুক্ত একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে ওই জনপ্রতিনিধি বলছেন, জাতীয় তথ্য বাতায়নের চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের অপশনটি দেখভাল করেন উদ্যোক্তা ওমর ফারুক। রাজনীতিসহ নানা কারণে তার সঙ্গে দূরত্ব থাকায় তিনি এ কাজ করেছেন। তবে ওই উদ্যোক্তার দাবি, এতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
স্থানীয়রা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে রাজনীতিক ও জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জাতীয় তথ্য বাতায়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পোর্টালে একজন জনপ্রতিনিধির নামের পাশে এ রকম শব্দ ব্যবহার করুচিপূর্ণ বলে মন্তব্যে উঠে এসেছে।
শুক্রবার রাতে স্থানীয় এক তথ্যপ্রত্যাশী জাতীয় তথ্য বাতায়নের উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের অপশনে প্রবেশ করলে পরিষদের চেয়ারম্যানের নামের পাশে ‘ভোট চোর’ শব্দটি দেখতে পান। পরে তিনি তার নিজের ফেসবুক আইডিতে এ সংক্রান্ত একটি স্ট্যাটাস দিলে তা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়, যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। একপর্যায়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে পড়লে ওই শব্দটি মুছে ফেলা হয়। বাতায়ন ঘেঁটে দেখা গেছে, গতকাল সবশেষ দুপুর ১টা ৫৭ মিনিটের দিকে তথ্য হালনাগাদ করা হয়েছে।
ভাইরাল ছবিতে ওই চেয়ারম্যানের শিক্ষাগতা যোগ্যতা অংশে অষ্টম শ্রেণি পাস দেখা গেছে। তবে বর্তমানে এসএসসি/সমমান দেখাচ্ছে। এ বিষয়ে শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় প্রতিদিনের বাংলাদেশের সঙ্গে কথা হয় চেয়ারম্যান ইউছুফ আলীর।
তিনি বলেন, ‘প্রস্তুতি নিয়েও আমি এসএসসি পরীক্ষায় বসতে পারিনি। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস কেন লেখা হয়েছে তা আমি জানি না।’
নাম বিকৃতির বিষয়ে তিনি জানান, নিয়ম অনুযায়ী পরিষদের ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ওমর ফারুক জাতীয় তথ্য বাতায়নের চরমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের অপশনটি দেখভাল করেন। এটিতে তথ্য হালনাগাদের জন্য প্রবেশের পাসওয়ার্ড একমাত্র তার কাছেই থাকায় তিনিই এর নিয়ন্ত্রক।
তিনি আরও জানান, স্থানীয় রাজনীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উদ্যোক্তার সঙ্গে তার দূরত্ব রয়েছে। আর এর জের ধরেই উদ্যোক্তা তাকে সামাজিকভাবে হেয় করতে কাজটি (নাম বিকৃত) করেছে। এ বিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেবেন।
তবে অভিযুক্ত ওমর ফারুকের দাবি, ‘একটি দুষ্টচক্র ওয়েবসাইটটি হ্যাক করে এ কাজটি করেছে। এতে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিষয়টি জানার পরপরই তিনি সাইট থেকে ওই শব্দটি মুছে ফেলেছেন।’
কমলনগর উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় তথ্য বাতায়নের মতো একটি সরকারি
ওয়েবসাইটে একজন প্রতিনিধির নামের পাশে এমন শব্দ যুক্ত খুবই দুঃখজনক ও মানহানিকর। ঘটনাটি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুচিত্র রঞ্জন দাস জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।