প্রকাশিত: ০৬/০৭/২০২২ ১০:৫১ এএম


নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই নিশ্চিত করছেন কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। স্বেচ্ছা পাহারা নামে পরিচিত এই ব্যবস্থায় ক্যাম্পে অপরাধ কমেছে ৯৫ শতাংশ। বেড়েছে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারও।

রোহিঙ্গারা বলছেন, স্বেচ্ছা পাহারা ব্যবস্থা চালুর পর তারা নিরাপদে আছেন। স্বস্তি নেমেছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনেও।

জানা গেছে, কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ধ্যা নামার পরপরই সুনসান নীরবতা আর অন্ধকারের সুযোগে ক্যাম্পে অপরাধীরা যখন সক্রিয়। ঠিক তখনই ‘এক রাত জেগে পাহারা দিয়ে আর ১৫ রাত শান্তিতে ঘুমাই’ এই মন্ত্রে ১০ লাখ মানুষের নিরাপত্তায় রাতভর পাহারা দিতে প্রস্তুত হন পাঁচজন।

২০২১ সালে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড ও সিক্স মার্ডারের পর উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সৃষ্টি হয় থমথমে পরিস্থিতি। চাঁদাবাজি, অপহরণ, মাদকব্যবসা আর ধর্ষণ বাড়তে থাকে ভয়ানক হারে। এ সময় ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের পাশাপাশি শান্তিকামী রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করার প্রত্যয়ে ‘স্বেচ্ছা পাহারা ব্যবস্থা’ চালু করে- ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। বর্তমানে ৩৪টি ক্যাম্পের সবকটিতেই চালু হয়েছে এই ব্যবস্থা।

ক্যাম্পকে ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। আর ব্লককে সাব ব্লকে। ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্বের প্রতিটি সাব ব্লকের সামনে পালাক্রমে ১৫ দিন পরপর ৫ জন করে পাহারা দেন। এভাবে প্রতিরাতে ১১ হাজার পাহারাদার দায়িত্ব পালন করে। আর শান্তিতে ঘুমায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা। এই পাহারা ব্যবস্থা তিন স্তরে মনিটরিং করা হয়।

এই ব্যবস্থায় অপহরণ, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ আর ভয়ভীতি প্রদর্শন শূন্যের কোটায় নেমে আসায় স্বস্তিতে রোহিঙ্গারা। স্থানীয়দের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সংঘাত নিয়ন্ত্রণে এই ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, নিরাপত্তায় দলগতভাবে এগিয়ে যাওয়ার দরকার। শুধু পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে; কিন্তু এর সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সংযুক্ত করা হয়েছে। এমনটা করলে তারা বিষয়টা বুঝবে। যাদের জন্য আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াতে চাই; তারাই জানতে পারবেন এখানে কারা অপরাধী, কারা দুষ্কৃতিকারী। তাহলে অপরাধের তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি ফলপ্রসূ বিষয় হবে।

তিনি বলেন, গত বছরের ২৩ অক্টোবর থেকে জামতলীসহ দুটি ক্যাম্পে স্বেচ্ছায় পাহারার ব্যবস্থা চালু হয়। এটা মূল্যায়ন করে দেখা যায় স্বেচ্ছায় পাহারার ব্যবস্থা অত্যন্ত ফলপ্রসূ।

পাহারায় অংশগ্রহণকারী রোহিঙ্গা শান্তিকামীরা অপরাধীদের সম্পর্কে দ্রুত তথ্য দিচ্ছেন। ফলে মাত্র নয় মাসে দুষ্কৃতকারী গ্রেফতার ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার বেড়েছে ৪ গুন। গুলি উদ্ধার বেড়েছে ৬০ গুন। আগ্নেয়াস্ত্র ও স্বর্ণ উদ্ধার বেড়েছে যথাক্রমে ৭ গুন ও ৩ গুন। আর সার্বিকভাবে অপরাধ কমেছে ৯৫ শতাংশ। সোর্স: সময়টিভি

পাঠকের মতামত

উপকূলের ম্যানগ্রোভে বিশ্বস্বীকৃতি—দ্য আর্থশট প্রাইজ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার ‘দি আর্থশট প্রাইজ ২০২৫’ জিতেছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। ...

রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি : নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আসামি চসিকের কর্মচারীও

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে এটি ব্যবহার ...

রোহিঙ্গা সংকটে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করবে আইওএম ও এইচসিআই

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং কানাডার প্রাচীনতম মুসলিম ত্রাণ সংস্থা হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (এইচসিআই) ও ...

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ সম্পন্ন

উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ...

রোহিঙ্গা নারীকে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরখাস্ত

এক রোহিঙ্গা নারীকে অবৈধভাবে নাগরিকত্ব সনদ দেওয়ায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ...