সরওয়ার আলম শাহীন,উখিয়া নিউজ ডটকম::
সংকট, সমস্যা ও ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য যানবাহন চলাচল করছে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে। লিংকরোড থেকে টেকনাফ ৭৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ছোট্ট পরিসরের এ সড়কটির কার্পেটিং ছুঁয়ে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠা, সড়কের ওপর হাটবাজরসহ নানা অব্যবস্থপনার কারণে আঁকাবাঁকা মোড় অতিক্রম করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ও যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে । সড়কের বিভিন্ন স্থানের ছোটবড় বাকেঁর কারনে দুই ঘণ্টার পথ যেতে লাগছে ৪ ঘণ্টা।
জানা গেছে, ১৪ ফুট প্রসে’র এ সড়কের উভয়পাশে ৫২ ফুট করে জায়গা সড়ক ও জনপদ বিভাগ অধিগ্রহণ করে লাল রং দিয়ে চিহ্নিত করলেও তা মানা হচ্ছে না। সড়কের উভয় পাশে সংরক্ষিত প্রায় জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। এরই মধ্যে উখিয়া দক্ষিণ স্টেশন থেকে পাতাবাড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ সড়কের এক পাশে খালের ভাঙন, অন্য পাশে গভীর খাদ যাত্রীদের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।তাছাড়া কক্সবাজার -টেকনাফ সড়কে ঘনঘন বাকেঁর কারনে সমং যেমন অপচয় হচ্ছে তেমনি দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটছে।যেন এক একটি বাকঁ,এক একটি মরন ফাঁদ।
স্থানীয় বাসিন্দা মাস্টার সুবর্ণ কুমার বড়–য়া জানান, এখানে একটি যাত্রীবাহি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খালে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় রাস্তার পাশে খুঁটি বা গাইডওয়াল নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগে আবেদন করার পর সওজ কর্মীরা রাস্তার বিপরীতে মাটি দিয়ে খাদ ভরাট করে দায়িত্ব শেষ করেছে।
উখিয়া জিপ, মাইক্রো, বাস-মিনিবাস মালিক-শ্রমিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো জানান, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, বন্দর, মাথিনের কূপ, করিডরসহ সীমান্ত শহর টেকনাফের নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে এ সড়কে প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছে অসংখ্য পর্যটক।তিনি বলেন, পর্যটন সড়ক হিসাবে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের যতটুকু উন্নয়ন হওয়ার কথা, তা হয়নি। যে কারণে এ সড়কে যাত্রী ও পর্যটকেরা যাত্রা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, ৭৯ কিমি. সড়কে ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ মোড় ও ১৩টি স্থানে সড়কের ওপর অবৈধ হাটবাজার বসার কারণে সড়কে যানজটে যাত্রীদের সময় অপচয় হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের লক্ষ্যস্থলে যানবাহন না পৌঁছার ঘটনায় যানবাহন শ্রমিক যাত্রী ও পর্যটকদের মাঝে বাগবিতক্তা হচ্ছে। এরই মধ্যে লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সড়কপথের উভয় পাশের জায়গা জবর দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বালি ও বিভিন্ন মালামালের আড়ত। ইতোমধ্যে অবৈধ দখলদারদের সরে যেতে নোটিস দিয়েছে সওজ। এজন্য সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে। অন্যথায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা পুনরুদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া।বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক কমিউনিটি সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পের ফিল্ড কমিউনিকেটর মো. মাইনুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে অসংখ্য বিপজ্জনক বাঁক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। এসব বাঁকে প্রতিনিয়ত অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়–য়া জানান, এ সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তাছাড়া বিপজ্জনক বাঁক ও যানজপ্রবণ স্থানগুলোও চিহ্নিত করা হয়েছে।