প্রকাশিত: ৩০/০৮/২০১৭ ৯:২১ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:২১ পিএম

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার::
বাংলাদেশ-মিয়ানমারকে আলাদা করেছে নাফনদী আর স্থল ভাগে কাটা তারের বেঁড়া। এপারে বিজিবির কড়া পাহারা। ওপারে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অমানবিক নির্যাতন। আর সীমান্ত এলাকায় হাজার হাজার রোহিঙ্গার আর্তনাদ। নারী ও শিশুদের এদিক-ওদিক ছোটাছুটি। বাড়িঘর, সহায়-সম্বল সব হারিয়ে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসে তারা। স্বজন হারানো রোহিঙ্গাদের মাঝে শংকা । সুযোগ বুঝে কক্সবাজার ও বান্দরবান হয়ে লোকালয়ে মুল জন¯্রােতে মিশে যাচেছ রোহিঙ্গারা । সীমান্তে অন্তত পনেরটি অরক্ষিত পয়েন্টের সবখানেরই একই চিত্র।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লায়লা বেগম (৬০), মনিরা খাতুন (৪৫) সহ অনেকে জানান, শান্ত হয়নি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য। অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের মংডু ঢেকিবনিয়া সহ আশপাশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কেউ হারিয়েছে বাবা মা, ভাই বোন। রোহিঙ্গারা বিজিবি’র পাহারায় পলিথিনের ছাউনির নিচে জটলা বেঁধে বসে আছে, চোখে মুখে বিষন্নতা আর স্বজন হারানোর বেদনা। ছোট ছোট স্থাপনা তৈরী করেই তাদের বেচে থাকার যুদ্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েকদিন আগে বিজিবির মহাপরিচালক জেনারেল আবুল হোসেন সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনের পর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি সদস্যরা কড়া নজরদারি করছে। এরপরেও অনুপ্রবেশ অব্যাহত আছে। এ পর্যন্ত ৫৫৩ জনকে ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। এদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। হোয়াইক্যং, উনচিপ্রাং ও উলুবনিয়া সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এদের ফেরত পাঠানো হয়। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহযোগীতার অভিযোগে দুই দালালকে আটক করে পুলিশ। এক দালালকে ভ্রাম্যমান আদালত সাজাও দিয়েছেন। এরপরও অনুপ্রবেশ ও দালাল তৎপরতা থেমে নেই।

কুতুপালং এলাকার জনপ্রতিনিধি বখতিয়ার আহমেদ বলেন, দিনে নাফনদীর পাড়ে অপেক্ষায় থাকা রোহিঙ্গারা রাতে আধারে ডুকে পড়ছে বাংলাদেশে। সীমান্তের অরক্ষিত অংশকে বেচে নিচ্ছে দালালরা। দালাল চক্র টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনুপ্রবেশে সহযোগীতা দিচ্ছে। তার পর সুযোগ বুঝে কক্সবাজার ও বান্দরবান হয়ে লোকালয়ে মুল জন¯্রােতে মিশে যাচেছ। এ পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। কেউ কেউ ডুকে পড়েছে শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে। আরো কয়েক হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় আছে।

রোহিঙ্গা কিশোরী আনোয়ারা খাতুন বলেন, অনুপ্রবেশের পর তাদের একমাত্র দুশ্চিন্তা তারা জন্ম ভুমিতে ফিরে যেতে পারবেতু ? খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছে তার মতো শতশত রোহিঙ্গারা । তিনি বলেন, আমি হয়তু জানিনা, আমাদেও মতো উদ্ধাস্তুদের শেষ গন্তব্য কোথায়। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতি সংঘের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এসব মানুষগুলো।

পাঠকের মতামত

কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি খাদ্যসহায়তা ডব্লিউএফপির

 রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব ...

উখিয়ায় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহে র‍্যালি-প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

কক্সবাজারের উখিয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী–২০২৫ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন এবং প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি ...

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় কোরিয়ার ৫০ লাখ ডলার অনুদান

কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৫০ লাখ মার্কিন ...

পল্লীবিদ্যুৎকে দায়ী করছে বনবিভাগবৈদ্যুতিক ফাঁদে উখিয়ায় বন্যহাতি নিধন

কক্সবাজারের উখিয়ায় আবারো বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রাজাপালং ...