ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১১/০৮/২০২৪ ৫:০২ পিএম

সেনাবাহিনীর সহায়তায় কক্সবাজার সদর থানায় স্বাভাবিক কার্যক্রম শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে। এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পর্যটন শহরটির পরিস্থিতি। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট খুলে ব্যবসার গতি ফেরানোর চেষ্টা করছেন। পর্যটন শিল্প ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনো আতঙ্ক কাটেনি তাদের। প্রায় সব রেস্তোরাঁ বন্ধ। আবাসিক হোটেল-মোটেল খোলা রয়েছে। সংকট তৈরির পর থেকে এ পর্যন্ত পর্যটন ব্যবসায় প্রায় হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

এদিকে সরকার পতনের পর থেকে কক্সবাজার শহর, জেলা-উপজেলা সড়কগুলোতে যানজট নিরসনে কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা। ময়লা-আবর্জনা অপসারণ করতেও দেখা গেছে তাদের। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে হাটবাজারে সচেতনতামূলক প্রচারও চালিয়েছেন তারা।

গত ৫ আগস্ট বিকেলে কক্সবাজারে থানা, ট্যুরিস্ট ও ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় লুট করা হয় গাড়ি, আসবাব, এসি, ফ্যান এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় চারটি হোটেলে ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় কউক ভবন। লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয় অর্ধশতাধিক দোকান এবং কয়েকটি বাসভবন। এসব ঘটনায় কক্সবাজারে সাধারণ মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে গত বুধবার বিকেলে সৈকত সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন হোটেল মালিক ও ব্যবসায়ীরা।

সমাবেশে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, গত ৩০ বছরে এই হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় কোনো অগ্নিসংযোগ-লুটপাট, চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেনি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি এই অপকর্ম চালিয়েছে এবং চালানোর অপচেষ্টা করছে। আমরা নিরাপদে ব্যবসা করার পরিবেশ চাই।

হোটেল মালিকদের এই সমাবেশে ছিলেন কক্সবাজার-৩ (সদর, রামু ও ঈদগাঁও) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান।

তিনি বলেন, বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের কেউ এই চাঁদাবাজি, হামলা-লুটপাটে জড়িত নয়। কারও জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্মিলিত উদ্যোগে সব ধরনের অপকর্ম প্রতিরোধ করতে হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা না থাকায় আতঙ্ক কাটছে না তাদের। আর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পর্যটকরাও আসছেন না। ফলে বন্ধ রাখতে হয়েছে হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস এবং রেস্তোরাঁ।

হোটেল সি প্রিন্সেসের সিনিয়র ম্যানেজার মাজেদুল বশর চৌধুরী বলেন, মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা না থাকায় ভয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। অনেক গেস্ট পরিস্থিতি বিবেচনায় কক্সবাজার আসছেন না। ফলে প্রধান ফটক বন্ধ রেখে হোটেলেই আছি আমরা।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমাদের সমিতিভুক্ত দেড় শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর বাইরে রয়েছে আরও ২৫০টির মতো রেস্তোরাঁ। বর্তমানে সব বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে বুঝতে পারছি না।

হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর কাশেম বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু থেকে সরকার পতন পর্যন্ত পর্যটন শিল্পে অন্তত হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি কীভাবে পুষিয়ে নেব, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

পাঠকের মতামত

মধ্যরাতে কক্সবাজার নার্সিং কলেজের শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করলো শিক্ষার্থীরা

কক্সবাজার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের শিক্ষার্থীরা ফ্যাকাল্টির পুরো কমিটির পদত্যাগ চেয়ে একদফা দাবি উপস্থাপন করে। ...