প্রকাশিত: ২২/০৬/২০২১ ৭:২৬ এএম

সুজাউদ্দিন রুবেল::
করোনা মহামারিতে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে প্রবেশে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু কোনোভাবে এই নিষেধাজ্ঞা মানতে চান না দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা পর্যটকরা। তারপরও সকাল থেকে রাত অবধি সৈকতের প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে বিচ কর্মী, লাইফগার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সোমবার (২১ জুন) বিকেল ৫টা। সৈকতের লাবণী পয়েন্টের প্রবেশদ্বারে দায়িত্ব পালন করছে বিচ কর্মী ইয়াছমিন আকতার ও মোহাম্মদ সেলিম। তাদের সামনে এসে হাজির ঢাকা থেকে আসা একদল পর্যটক। ইয়াছমিন ও সেলিম পর্যটকদের বলেন, ‘করোনার কারণে সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। দয়া করে, সরকার নির্দেশিত আদেশ মেনে সৈকতে প্রবেশ করবেন না।’ কিন্তু মুহূর্তেই মধ্যেই বেঁধে যায় তর্কাতর্কি। পর্যটকরা শুরু করে দেন গালিগালাজ, বলতে থাকেন, ‘বিচ কি তোদের বাপের।’
সৈকতের প্রবেশদ্বারগুলো এভাবে প্রতিদিন তর্কাতর্কি ও গালিগালাজের সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানালেন প্রহরীর দায়িত্বপালন করা বিচ কর্মী ও লাইফগার্ড কর্মীরা।
সৈকতের বিচ মার্কেটের সামনে দায়িত্ব পালন করছে সি সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মী মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, প্রতিদিনই শত শত পর্যটক কক্সবাজারে আসছে। তারা সৈকতে প্রবেশ করতে চায়। কিন্তু করোনার কারণে সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বললেই ক্ষেপে যান তারা। কিছুক্ষণ তর্কাতর্কি করে এক পয়েন্টে বাধা দিলে অন্য পয়েন্টে নেমে পড়ে। পরে ওই পয়েন্টে গিয়ে সৈকত থেকে উঠিয়ে দিলে গালিগালাজ করে। তারপরও করার কিছুই নেই, দায়িত্ব পালন করছি।

সি সেইফ গার্ড সংস্থা জানায়, দুই শিফটে ২৪ জন লাইফ গার্ড দায়িত্ব পালন করছে। সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ১২ জন লাইফ গার্ড।আবার বেলা ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২ জন।
লাইফ গার্ড কর্মী আব্দুস সালাম বলেন, লকডাউনের আগে সৈকতে পর্যটকের সমুদ্র স্নানে দায়িত্ব পালন করতাম। আর এখন লকডাউনকালে সৈকতে পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রবেশদ্বারগুলোতে দায়িত্ব পালন করছি।
লাইফ গার্ডের মতো সৈকতের প্রবেশদ্বারগুলোতে দায়িত্ব পালন করছে জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীরা। তারাও দুই শিফটে কাজ করছেন ১২ জন। তার মধ্যে নারী রয়েছে ৫ জন।
তারা বলেন, ২০১৯ সালের জুন মাসে চাকরিতে যোগদান করি। এরপর থেকে দুদফা লকডাউনে সৈকতে দায়িত্ব পালন করছি। দায়িত্বপালন করতে গিয়ে অনেক সময় পর্যটকদের গালিগালাজের সম্মুখীন হই। কিন্তু তারপরও করোনাকালীন মানুষের জীবন রক্ষায় এই দায়িত্ব পালন করতে পেরে অনেক ভালো লাগে।
সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞায় দায়িত্ব পালন করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশও। সৈকতের ৫টি পয়েন্টে সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছেন ৫০ জন পুলিশ।
দায়িত্বপালনরত ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াছিন মিয়া বলেন, লকডাউনের আগে বিপুল সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার সৈকতে ভ্রমণে এসেছিল। তখন প্রতিদিন লাখ লাখ পর্যটক আসলেও দায়িত্বপালন করতে কষ্ট হয়নি। কিন্তু লকডাউনের সময় দায়িত্বপালন করতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ আগত পর্যটক ও দর্শনার্থীরা সৈকতে নামতে চায়। কিন্তু করোনার কারণে সৈকতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কথা বললেই কোনোভাবেই মানতে চান না তারা। অনেকে তর্কাতর্কিতেও জড়িয়ে পড়ে। সরকারি আদেশও মানতে চান না।
উল্লেখ্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে গেল ৫ এপ্রিল হতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সকল পর্যটন স্পট বন্ধ রয়েছে। সুত্র: সময় টিভি

পাঠকের মতামত

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...